রাজ্য পুলিশের পাঠানো নোটিশে সাড়া দিচ্ছেন না কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার স্বামী। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে এমনই দাবি করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। যে মামলার প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতে সেই দাবি করেছে রাজ্য সরকার, সেই সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলার তদন্তে বিচারপতি সিনহার স্বামীর বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। সাক্ষী হিসেবে তাঁকে সেই নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেই সওয়ালের পরবর্তীতে রাজ্য পুলিশকে আইন মেনে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ফের সেই মামলার শুনানি হবে। সেইসময়ের মধ্যে নয়া রিপোর্ট পেশ করতে হবে রাজ্যকে।
সংবাদমাধ্যম বার অ্যান্ড বেঞ্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শীর্ষ আদালতে যে মামলা চলছে, তা দায়ের করেছেন ৬৪ বছরের এক বিধবা মহিলা এবং তাঁর মেয়ে। তাঁরা দাবি করেছেন যে ফৌজদারি মামলার তদন্তে হস্তক্ষেপ করেছেন বিচারপতি সিনহার স্বামী। যে বিষয়টির সূত্রপাত হয়েছিল পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে। সেই সম্পত্তি ছেড়ে দেওয়ার জন্য এক মামলাকারীকে একাধিকবার মারধর করা হয়েছিল। যা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল বলে দাবি করেছে মামলাকারীরা।
তাঁদের দাবি, নিজের আত্মীয়দের বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি মামলা রুজু করেছিলেন বৃদ্ধা। একটি মামলায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, মারধরের মতো অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। দ্বিতীয় মামলায় শ্লীলতাহানি, বিনা অনুমতিতে বাড়িতে ঢুকে পড়ার মতো অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বৃদ্ধা। সেই মামলার জন্য তাঁর আত্মীয়রা বিচারপতি সিনহার স্বামীকে আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত করেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
মামলাকারীদের দাবি, নিজের প্রভাব কাটিয়ে তদন্তকারী সংস্থার উপর চাপ তৈরি করতে থাকেন বিচারপতি সিনহার স্বামী। যাতে ওই দুটি মামলার ঠিকঠাক তদন্ত না হয়। সেই চাপের জেরে ওই দুটি মামলার তদন্ত কার্যত থমকে যায়। উপযুক্তভাবে যাতে ওই দুটি মামলার তদন্ত করা হয়, সেই নির্দেশ দেওয়ার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন বৃদ্ধা ও তাঁর মেয়ে। সেইসঙ্গে বিচারপতি সিনহা ও তাঁর স্বামী যাতে তদন্তে কোনওরকম প্রভাব খাটাতে না পারেন, তা নিশ্চিত করার আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা।
শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলায় তাঁরা দাবি করেছেন যে বিচারপতি সিনহার চেম্বারে মামলার তদন্তকারী অফিসারকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তাঁকে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল বলে দাবি করেছেন মামলাকারীরা। তাঁদের দাবি, তদন্তকারী অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে ফৌজদারি ধারা যেন তুলে নেওয়া হয়।