রাস্তা- ৪১৫ কিলোমিটার।
পেঁয়াজ- ২০৫ কিলোগ্রাম।
দাম- ৮.৩৬ টাকা!
কী? শেষে এসে হোঁচট খেলেন তো? আসলে যিনিই এই বিষয়ে পড়ছেন, তিনিই হতভম্ব হয়ে যাচ্ছেন। এমনটাও সম্ভব? কিন্তু বাস্তবেই এমন আজব অভিজ্ঞতা উত্তর কর্ণাটকের গাদাগের এক কৃষিজীবীর। গাড়ি ভাড়া করে এতটা লম্বা রাস্তা ধরে পেঁয়াজ নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এদিকে বেঙ্গালুরুর যশবন্তপুর বাজারে সেই পেঁয়াজ বেচে মাত্র ৮.৩৬ টাকা পেলেন তিনি। তাঁর সেই বিক্রি-বাটার রশিদ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর এর থেকেই বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতেও কৃষকদের দুর্দশা স্পষ্ট।
'দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, কৃষকের নাম পাওয়াডেপ্পা হলিকেরি। তিনি জানিয়েছেন, পেঁয়াজের দাম হিসাবে বলতে গেলে তিনি কিছুই পাননি। পাইকারি বিক্রেতা তাঁকে কুইন্টাল(১০০ কেজি) প্রতি মাত্র ২০০ টাকা করে দাম দিয়েছেন। আরও পড়ুন: ভাসমান ভেলাতেই ফলছে লাউ, শসা, মুলো! ২০০ বছরের প্রাচীন জলকৃষিতে চমক বাংলাদেশের
এদিকে সেখানেই শেষ নয়। মালবাহী চার্জের জন্য আরও ৩৭৭ টাকা ধরেন ওই পাইকারি ক্রেতা। মুটে-কুলির টাকা হিসাবে আরও ২৪ টাকা কেটে নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত মোট বিল হয়েছে মাত্র ৮.৩৬ টাকা। এই টাকায় বেঙ্গালুরুতে এক কাপ চা-বিস্কুটও জুটবে না।
হতভাগ্য কৃষিজীবী এই দুঃখের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। কর্ণাটকের রাজধানী, বেঙ্গালুরুতে ফসল বিক্রি করা থেকে সাবধান! সমস্ত কৃষকদের সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
হতাশ ওই কৃষক জানান, তিনি এই ফসল ফলাতে এবং বেঙ্গালুরুতে গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যেতে ২৫ হাজার টাকারও বেশি ব্যয় করেছেন। তাছাড়া মাসের পর মাস অমানুষিক পরিশ্রম, খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেও কৌশলে ফসল রক্ষা, কৃষির পদ্ধতি নিয়ে পড়াশোনা-অভিজ্ঞতা তো আছেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর এই কষ্টের কোনও দামই দিল না দেশের প্রযুক্তিনগরী।
উত্তর কর্ণাটকের বিভিন্ন জেলার কৃষকরা তাঁদের ফলনের জন্য MSP - ন্যূনতম সমর্থন দামের দাবিতে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা বিবেচনা করছেন। আরও পড়ুন: ফার্মাসি ও ল' কলেজকে অনুমোদন দিতেও মোটা টাকা তুলেছিলেন পার্থ, দাবি ED-র
চলতি বছর বৃষ্টির কারণে বহু কৃষিজীবীরই ফল আশানুরূপ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে যেটুকু হয়েছে, তাতেও যদি এই প্রহসনের শিকার হতে হয়, তবে পেশা বদল করা ছাড়া তাঁদের কোনও উপায় থাকবে না।