ফের একবার বর্ণভেদ ইস্যু ঘিরে তোলপাড় বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরাখণ্ড। ঘটনা সে রাজ্যের এক স্কুলের। উত্তরাখণ্ডের চম্পাওয়াত এলাকার এক স্কুলে গত এক সপ্তাহ ধরে কিছু ছাত্র মিডডে মিলের খাবার খেতে চাইছে না বলে খবর। বিষয়টি সম্পর্কে যখন স্কুল কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান করতে যায়, তখন ওই ছাত্ররা জানায়, দলিত মহিলার হাতে তৈরি মিডডে মিলের রান্না তারা বয়কট করছে। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়ে যায় চাঞ্চল্য। ফের একবার সামাজিক বিভাজন নিয়ে নতুন করে বিতর্কের ঝড় বইতে শুরু করে।
উত্তরাখণ্ডের চম্পাওয়াতের সুখিধাং এলাকার একটি গ্রামের সরকারি স্কুলে রান্নার কাজে সম্প্রতি নিযুক্ত হন সুনীতা দেবী। তপশিলি জাতিভুক্ত সুনীতা দেবী স্কুলের মিডডে মিল রান্নার দায়িত্ব পান। স্কুলের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য তিনি রান্নার কাজ করতে থাকেন। তবে কিছুদিন যেতেই দেখা যায় ওই পড়ুয়ারা সুনীতা দেবীর হাতের রান্না খেতে চাইছে না। স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রথম দিন উচ্চবর্ণের ছাত্ররা খাবার খেয়ে নিলেও, পরের দিন থেকেই শুরু হয় গোলযোগ। ধীরে ধীরে দেখা যায় স্কুলের ৫৭ জন পড়ুয়ার মধ্যে কেবল ১৬ জন দলিত শ্রেণির পড়ুয়াই মিডডে মিলের খাবার খাচ্ছে। এমন ঘটনা এলাকার বহু শিক্ষাবিদকেই স্তম্ভিত করেছে।
প্রসঙ্গত, স্কুলে যাতে ছাত্রদের উপস্থিতি বাড়ে সেই লক্ষ্যেই শুরু হয়েছে মিডডে মিল অভিযান। সরকারি ও সরকারি অনুমোদন ভুক্ত স্কুলে এই মিডডে মিল বিধি প্রচলিত। সেই নিয়ম অনুযায়ী চম্পাওয়াতের এই স্কুলেও মিড ডে মিলের রান্নার জন্য সুনীতা দেবীকে নিয়োগ করা হয়। তাঁর আগে এই দায়িত্বে ছিলেন জনৈক শকুন্তলা দেবী। তিনি অবসর নিতেই সুনীতা দেবীকে নিয়োগ করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে সমস্ত বিধি মেনেই নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ১১ জনের মধ্যে স্কুলের 'ভোজনমাতা' হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে সুনীতা দেবীকে। এদিকে গোটা ঘটনায় হতবাক স্কুলের প্রিন্সিপাল প্রেম সিং। তিনি জানাচ্ছেন, বহু ছাত্রই বর্তমানে মিড ডে মিলের জায়গায় বাড়ি থেকে টিফিন আনছে। এমন এক অবস্থায় বিভিন্ন মহলে বিতর্কের ঝড়। ছাত্রদের অবস্থানের মাঝে সমাধান সূত্র কীভাবে বের করা যায় সেই নিয়ে চিন্তায় স্কুল, অভিভাবক ও স্কুলের 'ভোজনমাতা' সুনীতা দেবী।