বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, পঞ্জাবে তত বাড়ছে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব। সেই পরিস্থিতিতে বুধবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করলেন নভজ্যোত সিং সিধু। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের অন্দরে সাংগঠনিক খোলনলচে পরিবর্তনের পর তাঁর ভূমিকা কী হবে, তা নিয়ে রাহুলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী।
মঙ্গলবার রাহুল অবশ্য দাবি করেছিলেন, সিধুর সঙ্গে তাঁর কোনও বৈঠক হওয়ার কথা নেই। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বুধবার সকালে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার বাসভবনে ‘দীর্ঘ বৈঠক’ করেন পঞ্জাবের বিধায়ক। পরে রাহুলের সঙ্গে ৪০-৪৫ মিনিটের সঙ্গে বৈঠক সারেন। রাহুলের বাসভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় কী আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে মুখ খোলেননি সিধু। রাহুলও কোনও মন্তব্য করেননি।
সূত্রের খবর, কংগ্রেস সরকারে সিধুকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল হাইকমান্ড। যদিও তা পত্রপাঠ খারিজ করে দেন প্রাক্তন ক্রিকেটার। বরং পঞ্জাবের প্রদেশ সভাপতির পদে বসার আর্জি জানান। কিন্তু সিধুর সেই ইচ্ছাপূরণের সম্ভাবনা কম। কারণ এমনিতেই ক্ষমতাশীল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে আছেন। সিধুও জাঠ। আর দুটি শীর্ষ পদ একই সম্প্রদায় থেকে সাধারণত দেওয়া হয় না। তাছাড়া অমরিন্দরের সঙ্গে সিধুর সম্পর্ক পুরোপুরি আদায়-কাঁচকলায়। অমরিন্দরের সঙ্গে বিবাদের কারণেই ২০১৯ সালের জুলাইয়ে পঞ্জাবের মন্ত্রিসভা ছেড়ে দিয়েছিলেন সিধু। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে সেই দ্বৈরথ আরও বেড়েছে। খোলাখুলি অমরিন্দরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সিধু। ফলে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে অমরিন্দরের তরফ থেকে যে বিরোধিতা আসা কার্যত নিশ্চিত, তা সম্ভবত বুঝে গিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী।
তবে সেইসব বিবাদ সরিয়ে রেখে বিধানসভা ভোটের লড়াইয়ে নামার মরিয়া চেষ্টা করছে কংগ্রেসের হাইকমান্ড। আর কয়েকমাস পরেই বড় পরীক্ষায় বসার আগে সিধু দল ছেড়ে যান, এমনটা মোটেও চাইছেন না সোনিয়া গান্ধীরা। তাই পঞ্জাবে কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে যে ‘যুদ্ধ’ চলছে, তাতে ইতি টানার জন্য নয়া ফর্মুলার সন্ধান চালাচ্ছেন কংগ্রেস নেতারা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, কংগ্রেসের সেই মনোভাব বুঝে গিয়েছেন সিধুও। তাই নিজের দরবার করতে একইদিনে রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি? ক্রিকেটীয় ভাষায়, সাংগঠনিক বদলের আগে কি ‘ছক্কা’ হাঁকানোর চেষ্টা করলেন ‘ওপেনার’ সিন্ধু? আপাতত সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে রাজনৈতিক মহল।