জম্মু ও কাশ্মীরকে রাজ্য থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিবর্তন করার পরে মাথাচাড়া দিয়েছে নতুন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্ট ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। সন্ত্রাস দমন বিভাগের এক আধিকারিক এই তথ্য জানিয়েছেন হিন্দুস্তান টাইমস-কে।
ওই আধিকারিকের দাবি, গত দুই দশকে কাশ্মীরে স্থানীয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠন গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। এর আগেও জম্মু ও কাশ্মীর পির পঞ্জাল পিস ফোরাম নামে একটি সংগঠন গড়ার পিছনে মুখ্য উদ্যোগ নিয়েছিল পাক সংস্থা।
উপত্যকা ও নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মের উপর নজর রাখা গোয়েন্দা দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, টিআরএফ-এর পিছনে অর্থ জোগাচ্ছে পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা। গোয়েন্দা কর্তাদের একাংশ আবার মনে করছেন, ফ্রন্ট পরিচয়ের আড়ালে আসলে নাশকতার ঘুঁটি সাজাচ্ছে খোদ লস্করই।
কাশ্মীরের নতুন এই সংগঠনের খোঁজ প্রথম মেলে টুইটার ও টেলিগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। প্রথম দিকে মনে হয়েছিল, কাশ্মীর সম্পর্কে খোঁজখবর রাখা পাকিস্তানের একাধিক সংগঠনের একটিই হয়তো এই নামে পোস্ট করছে। ওই সমস্ত পোস্টে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করা হয় এবং উস্কানিমূলক প্রচার চলে। প্রায়ই সেখানে বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত সন্ত্রাসবাদীদের ছবি পোস্ট করে শহিদ আখ্যা দিয়ে প্রতিহিংসার শপথ নেওয়া হয়।
সংবিধানের ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির পরে যখন জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নিয়ে ওই অঞ্চলকে কেন্দ্রশাসিত হিসেবে ঘোষণা করা হয়, তার পরেই শ্রীনগরের হরি সিং হাই স্ট্রিটে গত ১২ অক্টোবর গ্রেনেড হামলার দায় স্বীকার করে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিবৃতি দেয় টিআরএফ। ১৫ দিন পরে আর একটি বিস্ফোরণে এক সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর পরেও ঘটনার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় ওই সংগঠন।
জানা গিয়েছে, ওই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি ইসলামাবাদ থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পোস্ট করা হয় আইফোন থেকে। কাশ্মীরে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার পরে ইন্টারনেট সংযোগ ফিরে এলে পোস্টের সংখ্যা ও গতি বাড়তে থাকে।
গত মার্চ মাসেই প্রথম টিআরএফ-এর কিছু সদ্য অন্তর্ভুক্ত সদস্যদের মুখোমুখি হয় নিরাপত্তা বাহিনী। গত ২৩ মার্চ কুপওয়ারায় ওই ৬ সন্ত্রাসবাদীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধার হয় বিপুল অস্ত্রশস্ত্র।
টিআরএফ-এর লস্কর যোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় যখন পাকিস্তান থেকে তাদের হ্িযান্ডেলেসংগঠনের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে কেরান সেক্টরে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে নিহত ৫ সন্ত্রাসবাদীদের ছবি প্রচার করা হয়।