গতবছর আজকের দিনই ভারতে করোনা রোধক টিকাকরণ শুরু হয়েছিল। বিশ্বের সর্ববৃহত গণতন্ত্রে গত এক বছরে মোট ১৫৬ কোটি ৭৬ লক্ষ সংখ্যক কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে৷ আর গত ৩৬৫ দিন ধরে চলা এই টিকাকরণ অভিযানকে বিশ্বের সফলতম টিকা অভিযান বলে আখ্যা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। টুইট করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ মনসুখ মাণ্ডব্য লেখেন, ‘আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকাকরণ অভিযানের এক বছর পূর্ণ হল৷’ তিনি এই টিকাকরণ প্রক্রিয়াকে বিশ্বের সবচেয়ে সফল টিকাকরণ অভিযান হিসেবে উল্লেখ করেন৷ সব স্বাস্থ্যকর্মী, বৈজ্ঞানিকদের শুভেচ্ছা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷
উল্লেখ্য, গত বছর আজকের দিনেই দেশে স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা টিকা দেওয়া শুরু হয়েছিল। পরে ২০২১ সালের মার্চ মাসে টিকাকরণের পরিধি সম্প্রসারণ করা হয়।ধাপে ধাপে ষাটোর্ধ্ব এবং কোমর্বিডিটিযুক্ত ৪৫-৬০ বয়সীদের টিকাকরণ শুরু হয়। সর্বসাধারণের জন্যও চালু হয় টিকাকরণ। আর চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোরদের টিকাকরণ শুরু হয় দেশে। এর আগে গতবছর ১ এপ্রিল থেকে ৪৫ ঊর্ধ্ব সকল ব্যক্তি টিকাকরণের যোগ্যতা অর্জন করেন। পরে ১ মে দেশের সব প্রাপ্তবয়স্করাই টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতা অর্জন করেন। আর চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি ষাটোর্ধ্ব, কোভিড যোদ্ধাদের প্রিকশন ডোজ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে টিকার আকাল নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য তরজা চলেছে দেশে। পরবর্তীতে কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যগুলিকেও টিকাকরণের আংশিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে তারপরও রাজনৈতিক তরজা জারি ছিল। এর জেরে পুরো টিকাকরণে দায়িত্ব কেন্দ্র নিজের কাঁধে নিয়ে নেয় ফের একবার। এরপরে দ্রুত গতিতেই দেশে টিকাকরণ চলছে।
সরকার দেশের ১০০ শতাংশ জনগণকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করতে হর ঘর দস্তক টিকা প্রচার শুরু করে গতবছর নভেম্বরে। দেশে এখনও পর্যন্ত ৯০ কোটি ৬৮ লক্ষ ৪৪ হাজার ৪১৪ জনকে করোনার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে দেশে। অপরদিকে ৬৫ কোটি ৫১ লক্ষ ৯৫ হাজার ৭০৩ জনকে করোনার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কাজও সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়া ইতিমধ্যেই করোনার তৃতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪২ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯৯৩ জন।
বর্তমানে দেশে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার কোভিশিল্ড, ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন, রাশিয়ার স্পুটনিক ভি, মডার্না, জনসন এবং জনসনের একক ডোজ ভ্যাকসিন, জাইডাস ক্যাডিলার ZyCoV-D, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার কোভোভ্যাক্স এবং বায়োলজিক্যাল ই-এর কর্বেভ্যাক্স। তবে দেশের টিকাকরণে মূলত ব্যবহার হয়েছে কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন। রাশিয়ার টিকা বেসরকারি হাসপাতলে দেওয়া হলেও তা নেওয়ার জন্য সেরম আগ্রহ দেখাননি খুব একটা কেউ। অপরদিকে মডার্না বা জনসনের টিকা এখনও ভারতে আসেনি। জাইডাস ক্যাডিলার ZyCoV-D-র উত্পাদন শুরু হয়নি দেশে।