'ইউনিকর্ন'-র তালিকায় যুক্ত হল প্রযুক্তি-নির্ভর শিক্ষার স্টার্ট-আপ 'ফিজিক্সওয়াল্লা' (PhysicsWallah)। মঙ্গলবার স্টার্ট-আপের তরফে জানানো হয়েছে, 'সিরিজ এ ফান্ডিং' বা বাহ্যিক বিনিয়োগের আওতায় ১০০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৭৭৭ কোটি টাকা) সংগ্রহ করেছে।
এমনিতে 'ফিজিক্সওয়াল্লা'-র সিইও আলাখ পান্ডে (আলাখ স্যার নামে পরিচিত) তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। ছেলেবেলা থেকেই শিক্ষকতার প্রতি আলাখের প্রবল আগ্রহ ছিল। এমনকী ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের পড়াশোনা চলাকালীন কলেজ ছেড়ে দিয়েছিলেন। নিজের শহর এলাহাবাদে ফিরে গিয়ে পদার্থবিদ্যা পড়ানো শুরু করেছিলেন। সেইসময় মাসে ৫,০০০ টাকা উপার্জন করতেন।
আলাখ যে প্রতিষ্ঠানে পড়াতেন, সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান তাঁকে ইউটিউব চ্যানেল খোলার পরামর্শ দিয়েছিলেন। যাতে আরও বেশি পড়ুয়ার কাছে পৌঁছে যেতে পারেন আলাখ। সেইমতো ২০১৪ সালে নিজের ইউটিউব চ্যানেল চালু করেন। ২০১৭ সাল থেকে শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে পুরোদমে ইউটিউব শুরু করেন ‘আলাখ স্যার’। দু'বছরের মধ্যেই তাঁর চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: হেঁটে আন্তর্জাতিক পুরস্কার ছিনিয়ে নিলেন ৭৯ বছরের প্রাক্তন স্কুল শিক্ষিকা
তারইমধ্যে ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের ধাক্কায় অনলাইনে পড়াশোনার চাহিদা বৃদ্ধি পায়। সেই বছরই PhysicsWallah অ্যাপ চালু করেন। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ততদিনে বাজার একাধিক শিক্ষামূলক অ্যাপ থাকলেও PhysicsWallah-তে কোর্সের জন্য খরচ কম থাকায় সহজেই পড়ুয়াদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষত দ্বিতীয় সারির শহর এবং গ্রামে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
একাধিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, PhysicsWallah-র সাফল্যের মধ্যেই আলাখকে ৭৫ কোটি টাকার চাকরির প্রস্তাব দিয়েছিল অপর শিক্ষামূলক সংস্থা Unacademy। সেই প্রস্তাবের বিষয়ে একটি ভিডিয়োয় জানিয়েছিলেন। তবে সংস্থার নাম নেননি। সেইসঙ্গে ৭৫ কোটি টাকার চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। কারণটা সেই ভিডিয়োয় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। আলাখ জানিয়েছিলেন, তাঁর লক্ষ্য হল যে PhysicsWallah-র মাধ্যমে রিক্সাচালক বা সংবাদপত্রের হকারও যাতে নিজেদের সন্তানদের চিকিৎসক করার স্বপ্ন দেখতে পারেন।
তারইমধ্যে সেই ভিডিয়োয় আলাখ জানিয়েছিলেন, কোনও বিনিয়োগকারীকে তাঁর স্টার্ট-আপে টাকা ঢালতে দেবেন না। কারণ তাহলে পড়াশোনার খরচ বেড়ে যাবে। কিন্তু তারপর থেকে গঙ্গা দিয়ে প্রচুর বয়ে গিয়েছে। সম্ভবত নিজের কৌশলে পরিবর্তন এনেছেন আলাখ। শিক্ষামূলক স্টার্ট-আপের (বর্তমানে ৮০০ কোটি টাকার স্টার্ট-আপ) তরফে জানানো হয়েছে, ওয়েস্টব্রিড এবং জিএসভি ভেনচার্সের প্রায় ৭৭৭ কোটি টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্র্যান্ডিংয়ে জোর দেওয়া হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হবে। চালু করা হবে নয়া কোর্স।