রুপো চুরির অভিযোগে বাংলার ২ পরিযায়ী শ্রমিককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল গুজরাটে। মৃতদের নাম হল রাহুল শেখ (২৫) এবং মীনু শেখ (২৬)। ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের রাজকোটের থোরালা এলাকায়। একটি রুপোর গহনা তৈরির কারখানায় কাজ করতেন দুজনে। সেই কারখানার মালিকসহ অন্যান্য কর্মীদের বিরুদ্ধে তাঁদের পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ঘটেছে। এই ঘটনায় পুলিশ কারখানার মালিক সাগর সাভালিয়া, ম্যানেজার বিপুল মোলিয়া এবং কারখানার কর্মচারী হিমালয় ও ধবল সহ ৭জনকে আটক করেছে। এছাড়াও, তন্ময় এবং প্রদীপ নামে আরও ২ ব্যক্তি ওই শ্রমিকদের কারখানার কাজে লাগিয়েছিলেন। তাদেরকে আটক করেছিল পুলিশ, পাশাপাশি কারখানার নিরাপত্তারক্ষীকেও আটক করেছিল। তবে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ওড়িশায় মৃত্যু বাংলার শ্রমিকের, আত্মহত্যা না খুন, এই নিয়ে ধন্ধ
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার কারখানার ওই দুই শ্রমিককে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে নিরাপত্তারক্ষী। তখনই তিনি ১০৮ নম্বর ডায়াল করে অ্যাম্বুলেন্সে খবর দেন। একই সঙ্গে পুলিশকে ফোন করে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। দুজনের শরীর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, ওই কারখানায় সম্প্রতি ৩ কেজি রুপো উধাও ছিল। তখন কারখানায় কর্মরত ২৫ জন শ্রমিকের কাছে তল্লাশি চালায় ম্যানেজার এবং নিরাপত্তারক্ষীরা। সেই সময় রাহুলের কাছ থেকে ১০০ গ্রাম রুপো খুঁজে পান নিরাপত্তারক্ষীরা।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে কাজ করার পর রাহুলের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তিনি চুরির কথা স্বীকার করে নেন। এরপরে জানান, বাড়িতে অর্থের প্রয়োজনীয়তার কারণে তিনি রুপো চুরি করেছিলেন। সঙ্গে জানান মীনুর সাহায্য নিয়ে ওই রূপো বাজারে বিক্রি করার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। যদিও পুলিশ জানতে পেরেছেন মীনু ওই কারখানায় কাজ করতেন না।এরপর কারখানার মালিক রাহুলকে বলে মীনুকে ডাকতে। এরপর তিনি সেখানে এলেই তাঁদের দুজনকে উপরের তলায় নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে তাঁদের কাঠ এবং প্লাস্টিকের লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। মারধরের ফলে তাঁরা অচেতন হয়ে পড়েন। নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে তালা দিয়ে চলে যায়। সকালে অন্য এক নিরাপত্তাকর্মী ঘরটি খুললে দুজনকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।
অভিযুক্ত পুলিশকে জানায় , রাহুলকে রুপো চুরির অভিযোগে ৭ মাস আগে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। মালিকরা রুপোর ঘাটতি খুঁজে পেয়ে তাঁর উপর নজরদারি শুরু করে। এই ঘটনার ১০ দিন আগে তাঁকে আবার নিয়োগ করা হয়েছিল। পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (জোন-১) এস ভি পারমার বলেন, ‘আমরা মামলাটি তদন্ত করছি এবং এই খুনের সঙ্গে আরও শ্রমিক জড়িত কিনা তা জানার চেষ্টা করছি। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ ইত্যাদির মতো প্রমাণও সংগ্রহ করছি। যার পরে আমরা একটি অপরাধের মামলা নথিভুক্ত করব।’