হায়দরাবাদের পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ এবং খুনের জের এবার সংসদে । ২৬ বছরের যুবতীর উপর যেভাবে পাশবিক অত্যাচার করে তাঁকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে তাতে ফুঁসছে গোটা দেশ । ঘটনার জেরে সোমবার উত্তাল সংসদের দুই ভবনই। এদিন সমাজবাদী পার্টির নেত্রী তথা অভিনেত্রী জয়া বচ্চন দাবি জানান, ধর্ষনে অভিযুক্তদের গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলাই যুক্তিযুক্ত । এদিন গোটা দেশে মহিলাদের উপর বাড়তে থাকা যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ প্রসঙ্গে জোড় সওয়াল করেন রাজ্যসভার সাংসদ জয়া বচ্চন।
হায়দরাবাদ গণধর্ষণকাণ্ডে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে চার অভিযুক্তকে । বৃহস্পতিবার সকালে ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে চাট্টানপল্লি এলাকার এক কালভার্টের নীচ থেকে ওই চিকিৎসকের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয় । পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে মেয়েটিকে শামশাবাদ টোল প্লাজার কাছ থেকে তুলে নিয়ে যায় চার অভিযুক্ত, এরপর নৃসংশভাবে ধর্ষণ করার পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বছর ছাব্বিশের ওই মহিলাকে । এরপর শাদনগরের এর কালভার্টের ধারে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ।
'আমার মনে হয় সরকারের এবার একটা যথাযথ উত্তর দেওয়ার সময় এসেছে । কী হয়েছিল ? কীভাবে তারা ঘটনার মোকাবিলা করছে এবং নির্যাতিতার পরিবারকে বিচার পাইয়ে দিতে সরকারের ভূমিকা কী? সংসদের উচ্চকক্ষে এদিন মোদি সরকারকে প্রশ্ন করলেন জয়া বচ্চন। সাংসদ আরও বলেন, 'পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনার আগেরদিনও হায়দরাবাদে একই ঘটনা ঘটেছে । আপনাদের কি মনে হয় না যাঁরা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল তাদেরও প্রশ্নের মুখে পড়া উচিত ? তাঁদের জবাবদিহি করার সময় এসেছে, কেন সেই এলাকায় মেয়েদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ তারা ? এই সব মানুষগুলো যারা নিজেদের কাজ ঠিকভাবে করে নি, তারা গোটা দেশের লজ্জা। এই সব মানুষকে (যারা ধর্ষণে অভিযুক্ত) জনসমক্ষে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা উচিত', রাজ্যসভায় এদিন ক্ষোভ উগরে দিলেন জয়া।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডুও দেশে মহিলা ও শিশুদের উপর বাড়তে থাকা নির্যাতন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রাজ্যসভায় প্রবীণ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, শুধুমাত্র আইন প্রনয়ণ করলেই এই ধরণের ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভবকর নয়। ‘এই ধরণের অপরাধীদের শাস্তি দিতে গেলে গোটা দেশকে একজোট হতে হবে’, রাজ্যসভায় বলেন গুলাম নবি আজাদ ।
লোকসভাতেও চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এই ঘটনা। স্পিকার ওম বিড়লা জানান, 'গোটা দেশজুড়ে যেসব ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে সংসদ উদ্বিগ্ন। আমি প্রশ্নোত্তর পর্বের পর এই ঘটনা নিয়ে আলোচনার অনুমতি দিয়েছি’।
নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ দায়ের করার বিষয়ে গাফিলতির জেরে তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করেছে তেলেঙ্গানা পুলিশ। চার অভিযুক্তকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গোটা দেশে বাড়তে থাকা বিক্ষোভের জেরে রবিবারই মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও ঘটনার বিচারের জন্য ফার্স্ট ট্রাক কোর্ট গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন ।