কোভিডের ধাক্কায় লাইনচ্যুত হয়েছিল ভারত সহ গোটা বিশ্বের অর্থনীতি। গুটি গুটি পায়ে ফের ট্র্যাকে ফেরার চেষ্টাও করছিল সবাই। এরই মাঝে ফের রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধে ফের গোল পেকেছে। এই আবহে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়ে দিল, অর্থনীতির উপর করোনা অতিমারীর যে ক্ষত রয়েছে, তা শুকোবে ২০৩৪-৩৫ অর্থবর্ষে গিয়ে। সদ্য প্রকাশিত আরবিআই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, আপাতত দেশের আর্থিক বৃদ্ধি ৬.৫ থেকে ৮.৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে। আরবিআই জানায়, ২০২১-২২-এ ৮.৯ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধি দেখবে দেশ। এবং চলতি অর্থবর্ষে (২০২২-২৩) প্রবৃদ্ধির হার সম্ভবত ৭.২ শতাংশ হবে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, বর্তমানে জিডিপি-র তুলনায় সরকারি ঋণের হার ৯০ শতাংশ। আগামী পাঁচ অর্থবর্ষে জিডিপির তুলনায় ঋণের হার কমিয়ে ৬৬ শতাংশ করতে বলে মত আরবিআই-এর। (আরও পড়ুন : করোনা টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজের মধ্যে ব্যবধান কি কমছে? যা ভাবছে কেন্দ্র)
করোনা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৬.৬ শতাংশ সঙ্কোচন হয়েছিল ভারতীয় জিডিপি। লকডাউনের জেরে গোটা দেশ স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায় বেহাল দশা হয়েছিল অর্থনীতির। কাজ হারিয়েছিলেন কয়েক কোটি মানুষ। পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় উর্পাদন শিল্পে বড় ধাক্কা লেগেছিল। এই সব বিষয়ে পর্যালোচনা করে আরবিআই বার্ষিক ‘কারেন্সি অ্যান্ড ফিনান্স’ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোভিড আতঙ্ক কাটিয়ে আর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি এসেছে ঠিকই, তবে কোভিড পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরতে পারেনি দেশের অর্থনীতি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোভিড অতিমারির জেরে কৃষি ক্ষেত্র সেভাবে প্রভাবিত না হলেও মুখ থুবড়ে পড়েছিল হোটেল, পরিবহণ, উৎপাদনের মতো ক্ষেত্র। এর মধ্যে উৎপাদন খাতে ফের গতি এসেছে। তবে হোটেল, পরিবহণের মতো সেক্টরে এখনও অনেক সমস্যা রয়ে গিয়েছে। এরই মাঝে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের জেরে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। ভারতের মতো দেশ যেখানে আমদানিকৃত জ্বালানির উপর নির্ভরশীল, সেখানে তেলের মূল্যবৃদ্ধির জেরে বাকি জিনিসপত্রেরও দাম বাড়ছে। এদিকে যুদ্ধের জেরে বিনিয়োগও হচ্ছে মন্থর গতিতে। সব মিলিয়ে ভারতের অর্থনীতির ট্র্যাকে ফেরা বাধার সম্মুখীন।