যদি সত্যিই দেশবাসীকে ‘আত্মনির্ভর’ দেখতে চান, তা হলে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমার ভিত্তিতে ভারতে পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়াবেন না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে চিঠিতে এমনই আর্জি জানালেন কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গান্ধী।
মঙ্গলবার ওই চিঠিতে সনিয়া লিখেছেন, করোনা সংক্রমণের জেরে আচমকা স্বাস্থ্য বিপর্যয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকটে নাজেহাল পরিস্থিতির মাঝে জ্বালানির দাম বাড়ানোর ফলে দেশবাসীকে চূড়ান্ত বিপাকের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
তিনি লিখেছেন, ‘গত মার্চ মাস থেকে শুরু হওয়া এই ভয়াবহ সংকটকালে সরকারকে কমপক্ষে দশ দফায় পেট্রল ও ডিজেলের দাম বাড়ানোর মতো এমন অসংবেদনশীল সিদ্ধান্ত নিতে দেখে আমি গভীর ভাবে মর্মাহত।’
এর আগেই পেট্রল ও ডিজেলের দাম বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমার মুনাফা থেকে দেশবাসীকে বঞ্চিত করার পাশাপাশি পেট্রল, ডিজেল ও এলপিজি-র দাম ২০০৪ সালের অগস্ট মাসের দর অনুযায়ী নির্দিষ্ট করার জন্যও কেন্দ্রের কাছে তিনি দাবি জানান। উল্লেখ্য, সেই সময় দিল্লিতে পেট্রলের দাম ছিল লিটারপ্রতি ৩৬.৮১ টাকা, ডিজেলের দাম ছিল ২৪.১৬ টাকা এবং এলপিজি প্রতি সিলিন্ডার বিক্রি হত ২৬১.৬০ টাকায়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে রাহুল অভিযোগ করেন, ‘আপনার সরকার এই সমস্ত জ্বালানির দাম বাড়িয়ে গরিবের পকেট সাফ করে ২,৬০,০০০ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই লাভ করে ফেলেছে। দেশজুড়ে অতিমারী আতঙ্কের মাঝে আপনাদের এই হঠকারিতার মাশুল গুনছে কোনঠাসা দেশবাসী।’
এ দিন সনিয়াও তাঁর চিঠিতে একই অভিযোগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন যে, আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক সপ্তাহে অপরিশোধিত তেলের দাম ৯% কমলেও দেশবাসীর থেকে লাভ করতে দাম বাড়ানোর পথে হাঁটছে মোদী সরকার। গত ৬ বছর ধরে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমায় যে সুবিধা দেশের মানুষের পাওয়ার কথা ছিল, শুল্ক ও কর বাড়িয়ে জ্বালানির দাম চড়িয়ে তার ফায়দা লুটেছে কেন্দ্র।
দীকে লেখা চিঠিতে সনিয়া জানিয়েছেন, ‘যদি দেশবাসীকে সত্যিই আত্মনির্ভর দেখতে চান, তা হলে তাঁদের অগ্রগতির পথে এ ভাবে বাধা সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকুন। এবং আরও একবার নিজের আর্জির পুনরাবৃত্তি করছি যে, সরকারি রাজকোষ কাজে লাগিয়ে এই কঠিন সংকটে দরিদ্রের হাতে সরাসরি অর্থ পৌঁছে দিন।’
প্রসঙ্গত, গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দামে রেকর্ড পতন হওয়া সত্ত্বেও পর পর ১০ দিন জ্বালানির দাম বেড়েছে ভারতে।