বার্ষিক তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে সুইৎজারল্যান্ড থেকে ভারতীয় নাগরিক ও সংস্থাগুলির সুইস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিশদ তথ্য হাতে পেল কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে ‘শত শত অ্যাকাউন্টে’র তথ্য এসেছে ভারতের কাছে। এতে থাকতে পারে প্রচুর পরিমাণ ‘কালো টাকা’। এই নিয়ে টানা চতুর্থ বছর সুইস ব্যাঙ্কে থাকা ভারতীয়দের অ্যাকাউন্টের বিশদ জানতে পেল ভারত।
সুইস ফেডারাল ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গত সেপ্টেম্বরেই এই তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে ভারতসহ ৭৪টি দেশের সরকারের হাতে। মোট ৩৪ লক্ষ অ্যাকাউন্টের তথ্য সংশ্লিষ্ট সরকারগুলিকে দেওয়া হয়েছে। এদিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, এই তথ্যের ভিত্তিতে কর ফাঁকি, বেআইনি লেনদেন, নাশকতা, অর্থ পাচার, তছরুপের মতো দুর্নীতির তদন্ত চলবে। তবে কার অ্যাকাউন্টের তথ্য কেন্দ্র হাতে পেয়েছে, তা প্রকাশ করেনি। তথ্য আদান প্রদানের শর্ত অনুযায়ী, প্রাপ্ত তথ্য প্রকাশ করা যাবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তালিকায় থাকা অ্যাকাউন্টের মালিকদের বেশিরভাগই ব্যবসায়ী। অনাবাসী ভারতীয়দের সংখ্যা তালিকায় বেশি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কিছু আফ্রিকান এবং দক্ষিণ আমেরিকার দেশে বসবাসরত ব্যবসায়ীর নাম রয়েছে তালিকায়৷ জানা গিয়েছে, চলতি বছরে সুইস কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই ১০০ জনেরও বেশি ভারতীয় নাগরিক এবং সংস্থার তথ্য দিয়েছে ভারত সরকারকে। পানামা, ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ এবং কেম্যান দ্বীপপুঞ্জে ব্যবসা করা ভারতীয় সংস্থার নামও দিল্লিকে দিয়েছে সুইস কর্তৃপক্ষ। এদিকে কিছু রাজ পরিবারের সদস্য, রাজনীতিবিদেরও নাম রয়েছে সুইৎজারল্যান্ডের দেওয়া তাকিলায়। তালিকায় থাকা ব্যক্তি বা সংস্থার ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর এবং মূলধনী আয়ের বিস্তারিত তথ্যও ভারতের হাতে তুলে দিয়েছেন সুইস কর্তৃপক্ষ। এই আবহে বহু মানুষের হিসাববহির্ভূত সম্পদের হদিস পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া কালো টাকার মাধ্যমে জঙ্গি কার্যকলাপে মদত করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা যাবে। ‘কালো টাকা’র বিরুদ্ধে ভারত সরকারের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে এটা একটি বড় জয় বলে মনে করা হচ্ছে।