সদ্য যোগী মন্ত্রিসভা ছেড়ে বিজেপির তিন মন্ত্রী অখিলেশ শিবিরের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। সঙ্গে তাঁদের সঙ্গী, অনুরাগীরাও সমাজবাদী পার্টি শিবিরে যোগ দিয়েছেন। দলিত শিবিরের প্রতিনিধি এই মন্ত্রীরা পদ্ম ক্যাম্প ত্যাগ করায় বিজেপির ভোট শতাংশ নিয়ে বহু জল্পনা তৈরি হয়েছে গঙ্গাপাড়ের রাজনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে যোগী শিবিরের ভোট-অঙ্কে দলিত ভোটব্যাঙ্ক কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এদিকে, শনিবার উত্তরপ্রদেশের প্রথম দুই দফার ভোটে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে বিজেপি। আর তাতেই রয়েছে বেশ কিছু চমক।
মনে করা হচ্ছিল যে, হিন্দুত্ব তাসে জোর দিয়ে বিজেপি সম্ভবত অযোধ্যা থেকে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ভোট রণাঙ্গনে রাখবে। তবে সেই জল্পনা নস্যাৎ করে, বিজেপি যোগীর পোক্ত পিচ গোরক্ষপুর থেকে তাঁকে প্রার্থী করেছে। এদিকে, উপমুখ্যমন্ত্রী প্রয়াগরাজের সিরাথু থেকে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন। তবে প্রথম দুই দফার ভোটে বিজেপি সবচেয়ে বড় চমক রেখেছে দলিত ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে। যেখানে যোগীমন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য স্বামী প্রাসদ মৌর্য, ধরম সিং সাইনি, দারা সিং চৌহানরা বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দলিতদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ এনে দল ছেড়েছেন , সেখানে প্রথম দুই দফার ভোটের প্রার্থী তালিকায় বিজেপি, মোট প্রার্থীর ৬০ শতাংশেই অনগ্রসর শ্রেণি ও তপশিলী জাতির প্রতিনিধিদের রেখেছে। আর তার সঙ্গেই কার্যত বিজেপি স্পষ্ট করে দিয়েছে, দলিত ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান।
সমাজবাদী পার্টি সহ বিজেপি বিরোধীরা যেখানে উত্তরপ্রদেশে দলিত ইস্যুকে সামনে রেখে ভোট প্রচারে নেমেছে, সেখানে দলিত ভোটব্যাঙ্ককেই যে বিজেপি পাখির চোখ করছে, তা স্পষ্ট হয়েছে এই প্রার্থী তালিকায়। ১০৭ জন বিজেপি প্রার্থীর নাম ঘোষিত হয়েছে শনিবার। সেখানে ৪৪ জন প্রার্থী অনগ্রস শ্রেণির, ১৯ জন তপশিলি জাতির প্রতিনিধি। যে সমস্ত কেন্দ্রের আসন অনগ্রসর শ্রেণির প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত নয়, সেখানেও অনগ্রসর শ্রেণির প্রার্থীকে রেখে কার্যত দলের অবস্থান পরিষ্কার করেছে গেরুয়া শিবির। তালিকায় আরও চমক রেখে বিজেপি ২১ জন নতুন মুখকে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভার ভোট রণাঙ্গনে অবতীর্ণ করেছে। প্রথম দুই দফার ভোটে যে প্রার্থী তালিকা আজ ঘোষণা হয়েছে, তার মধ্যে ৬৩ জন বিধায়ক , আর বাকি ২১ জন নতুন মুখকে সামনে এনেছে বিজেপি।
যোগী শিবিরের প্রথম দুই দফার প্রার্থী তালিকায় বর্তমান বিধায়কদের মধ্যে ২০ শতাংশকে টিকিট দেয়নি দল। যা উত্তরপ্রদেশের রাজনীতির ঘূর্ণাবর্তে কার্যত তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন অনেকেই। ১০৭ জনের প্রার্থী তালিকায় রয়েছে ১০ জন মহিলার নাম। মনে করা হচ্ছে, প্রার্থী তালিকায় দলিত প্রার্থীদের এগিয়ে রেখে, বিজেপি কার্যত তার বিরুদ্ধে আসা দলিত ইস্যুতে নানান অভিযোগ খণ্ডন করার চেষ্টায় রয়েছে। তবে, ঠাকুরদের প্রতিনিধি আদিত্যনাথকে ঘিরে ব্রাহ্মণদের অসন্তোষে কিছুটা ব্যাকফুটে থাকা বিজেপি, ব্রাহ্মণ ভোটব্যাঙ্ককে কাছে টানতে কোন পদক্ষেপ নেয়, সেদিকে তাকিয়ে দল।