সুপ্রিম নির্দেশের পর গতকাল বিজেপি সাংসদ তথা কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে দিল্লি পুলিশ। এরপর এই প্রথম মুখ খুললেন ব্রিজ ভূষণ। তিনি দাবি করেন, তিনি নির্দোষ এবং তিনি নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন না। বিজেপি সাংসদ বলেন, 'আমি নির্দোষ এবং তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। আমি তদন্তকারী সংস্থাকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। বিচার বিভাগের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে এবং আমি সুপ্রিম কোর্টের আদেশকে সম্মান করি।' এদিকে কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'পদত্যাগ বড় কথা নয় কিন্তু আমি অপরাধী নই। আমি যদি পদত্যাগ করি, তার মানে হবে আমি তাদের (কুস্তিগীরদের) অভিযোগ মেনে নিয়েছি। আমার মেয়াদ প্রায় শেষ। সরকার ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। এদিকে ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে এবং নির্বাচনের পর আমার মেয়াদ শেষ হবে।'
প্রসঙ্গত, ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই দিল্লির যন্তর মন্তরে ধরনায় বসেছিলেন ভারতের তাবড় কুস্তিগীররা। সুপ্রিম কোর্টে এই নিয়ে মামলাও করা হয়েছিল। এই আবহে গতকাল সুপ্রিম নির্দেশিকার পর অবশেষে ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে দু'টি এফআইআর রুজু করে দিল্লি পুলিশ। এর মধ্যে একটি মামলা যৌন হেনস্থার। অপর এফআইআর করা হয়েছে নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে। এই আবহে পকসো আইনে মামলা করা হয়েছে বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে।
এফআইআর প্রসঙ্গে ব্রিজ ভূষণ দাবি করেন, সরকারের গঠিত কমিটির রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা উচিত ছিল কুস্তিগীরদের। তবে তিনি সুপ্রিম নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'আমি বিচারব্যবস্থার সিদ্ধান্তে খুশি। দিল্লি পুলিশ এই মামলার তদন্ত করবে এবং আমি সবরকম ভাবে তাঁদের হযোগিতা করতে প্রস্তুত। এই দেশে বিচারব্যবস্থার থেকে কেউই বড় নয়। এফআইআর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সরকারও জানায় যে তারা এফআইআর করবে। আমি তো সুপ্রিম কোর্টের থেকে বড় নই। আমি এই নির্দেশকে স্বাগত জানাচ্ছি।'
এর আগে ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার তদন্তের জন্য মেরি কমের মেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছিলেন কুস্তিগিররা। এরই মাঝে কুস্তিগিরদের অভিযোগ, দিল্লি পুলিশ ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ গ্রহণ করছে না। এই আবহে যন্তর মন্তরে ধরনায় বসেন তাঁরা। বিষয়টির রাজনৈতিক মোড় নেয়। হরিয়ানা খাপ পঞ্চায়েত নেতারা যোগ দেন প্রতিবাদে। কংগ্রেসও এই প্রতিবাদে সামিল হয়েছে। কুস্তিগীরদের সঙ্গে গিয়ে আজ দেখা করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অভিযোগ করার জন্য সময় চেয়েছেন কুস্তিগীররা। তবে আন্দোলনকারীদের হতাশ হতে হয়েছিল। এদিকে এফআইআর হওয়ার পরও আন্দোলন জারি রেখেছেন কুস্তিগীররা। তাঁদের দাবি, যতক্ষণ না ব্রিজ ভূষণ গ্রেফতার হচ্ছেন, তাঁদের আন্দোলন জারি থাকবে।