ব্রিজভূষণ কাণ্ডে নয়া মোড়। কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে ৭ কুস্তিগির যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন নাবালিকা। তাঁর হয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাঁর বাবা। এবার সেই নাবালিকা কুস্তিগিরের বাবা দাবি করলেন, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে তাঁরা মিথ্যা কথা বলেছিলেন। হিন্দুস্তান টাইমসকে তিনি জানান, তাঁর মেয়ে য়ৌন হেনস্থার শিকার হয়নি তবে বৈষম্যের শিকার হয়েছে। তিনি দাবি করেন, রাগের চোটে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছিলেন তাঁরা। তিনি বলেন, 'আমার মেয়ে গতবছর এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রায়ালের ফাইনালে হেরে গিয়েছিল গতবছর। তাই আমি রাগের মাথায় যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছিলাম ফেডারেশন সভাপতির বিরুদ্ধে।'
জানা গিয়েছে, এর আগেই ১৭ বছর বয়সি সেই কুস্তিগির সিআরপিসি-র ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নতুন করে বয়ান রেকর্ড করিয়েছেন। তাতে তিনি দাবি করেছিলেন, তাকে যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়নি। এই বয়ান আদালতে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এই বয়ানের ওপর ভিত্তি করে আদালত সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে এই মামলা এগোবে নাকি সেটাকে খারিজ করা হবে। এদিকে এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই প্রছমে নাবালিকার বাবা দাবি করেছিলেন, কোনও অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়নি। তবে জানা গিয়েছে, গত ৫ জুন নাবালিকার বাবাও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নতুন করে বয়ান রেকর্ড করেন। এবং গতকাল তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, তাঁর মেয়ে যৌন হেনস্থার শিকার হয়নি।
অভিযোগকারী নাবালিকার বাবা বলেন, 'গতবছর এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রায়ালের ফাইনালের দায়িত্বে থাকা সব আধিকারিক দিল্লি থেকে ছিলেন। এদিকে আমার মেয়ের প্রতিপক্ষও দিল্লির ছিল। এটা বেআইনি।' তিনি জানান, পুলিশের কাছে তিনি নিজের বয়ান বদলেছেন। তিনি বলেন, 'কিছু অভিযোগ সত্যি ছিল, কিছু মিথ্যা ছিল। ব্রিজভূষণ আমার মেয়েকে যৌন হেনস্থা করেননি। কিন্তু তিনি আমার মেয়ের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন। আমি হুমকিমূলক কল পেয়েছি। কিন্তু আমি তাদের নাম প্রকাশ করব না। আমি আমার মেয়ের কোচিংয়ের খরচ বহন করার জন্য আমার বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছিলাম। তবে এখন কারও চাপে না পড়েই আমি আমার বক্তব্য পুনরায় রেকর্ড করেছি। আমি এই লড়াইলতে সামিল হতে চাই না। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই।' এদিকে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এখনও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ (শ্লীলতাহানী), ৩৫৪এ (যৌন হেনস্থা), ৩৫৪ডি (পিছু নেওয়া) ধারায় মামলা রুজু রয়েছে। এই আবহে সম্প্রতি দিল্লি পুলিশ গোন্দায় তাঁর বাড়িতে গিয়ে অনেককে জেরা করেছে। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর দাবি করেছেন যে আগামী ১৫ জুনের মধ্যে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন হবে। ততদিন কুস্তিগিররা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছেন।