ডুরান্ডের ফাইনাল এবার কলকাতাতেই, আশান্তির জেরে মণিপুরে হবে না কোনও ম্যাচ

ঘরোয়া হিংসা মণিপুরে মারাত্মক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। আর সেই হিংসার জেরেই এবার ঐতিহ্যবাহী ডুরান্ড কাপের কোনও ম্যাচ হবে না মণিপুরে। গত কয়েক মাসের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির কথা মাথাতে রেখেই ফুটবল প্রতিযোগিতা সেখানে আয়োজন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা।

ডুরান্ডের ফাইনাল হবে কলকাতায়।

শুভব্রত মুখার্জি: মণিপুরে দীর্ঘদিন ধরে অশান্তি অব্যাহত। যা এই মুহূর্তে হিংসার আকার ধারণ করেছে। মেইতাই গোষ্ঠীর আন্দোলনকে সামনে রেখে পোড়ানো হয়েছে লোকের ঘরবাড়ি। নষ্ট করা হয়েছে সম্পত্তি। বাদ যায়নি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়িও। এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে মণিপুর রাজ্যের সাম্প্রতিক হিংসার কথা মাথাতে রেখে আসন্ন ডুরান্ড কাপের একটি ম্যাচও উত্তর পূর্বের এই রাজ্যে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টুর্নামেন্ট আয়োজকেরা। পাশাপাশি কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের জন্যও সুখবর। ঐতিহ্যশালী এই টুর্নামেন্টের এবারের ফাইনালের আসর বসতে চলেছে কলকাতাতে।

মণিপুরে এবারের অশান্তির ঘটনা না ঘটলে, ইম্ফলে উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল টুর্নামেন্টের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করতে বাধ্য হয় ভারতীয় সেনা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ৩ অগস্ট ডুরান্ড কাপের উদ্বোধন হবে অসমের রাজধানী গুয়াহাটির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে। প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি নর্থইস্ট ইউনাইটেড এবং শিলং লাজং।

মোট ন'টি ম্যাচ খেলা হবে গুয়াহাটিতে। ছ’টি গ্রুপে চারটি করে মোট ২৪টি দল খেলবে এবার। গ্রুপ এ-তে আবার একসঙ্গে রয়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস এবং ইস্টবেঙ্গল। এ, বি ও সি গ্রুপের অধিকাংশ ম্যাচ খেলা হবে কলকাতায়। ৩ সেপ্টেম্বর ফাইনালও হবে কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। এবারের ডুরান্ডে রয়েছে আইএসএলের ১২টি দল, আইলিগের পাঁচটি দল এবং ভারতীয় সেনার তিনটি দল। বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের একটি করে দল এবং অসমের স্থানীয় একটি দল খেলবে প্রতিযোগিতায়।

ঘরোয়া হিংসা মণিপুরে মারাত্মক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। আর সেই হিংসার জেরেই এবার ঐতিহ্যবাহী ডুরান্ড কাপের কোনও ম্যাচ হবে না মণিপুরে। গত বছর যে তিন রাজ্যে ডুরান্ড কাপ হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যটিও। গত কয়েক মাসের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির কথা মাথাতে রেখেই ফুটবল প্রতিযোগিতা সেখানে আয়োজন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা।

এবার মণিপুরের বদলে অসম, মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গে খেলা হবে প্রতিযোগিতার ম্যাচগুলো। ভারতীয় সেনার পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ডের লেফটেন্যান্ট জেনারেল আরপি কালিটা জানিয়েছেন, ‘গত বছর মণিপুর সাফল্যের সঙ্গে ডুরান্ড কাপের ম্যাচ আয়োজন করেছিল। কিন্তু এবার সেখানকার পরিস্থিতি একেবারেই অনুকূল নয়। এই পরিস্থিতিতে কোনও ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব হবে না। তবে আমরা নিশ্চিত পরের বছর ফের মণিপুরে ডুরান্ডের ম্যাচ আয়োজন করতে পারব।’

প্রসঙ্গত গত বছরের টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা হয়েছিল মণিপুরের ইম্ফলে। সেবার ডুরান্ড কাপের উদ্বোধন করেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। প্রতিযোগিতার ১০টি ম্যাচ খেলা হয়েছিল মণিপুরে। সেবার প্রথম ম্যাচে খেলা হয়েছিল মণিপুরের দুই ক্লাব নেরোকা এফসি ও ট্রাউ এফসির সঙ্গে। যা দেখার জন্য রাজ্যের সব সরকারি অফিস এবং স্কুলে অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল।