ঘরের মাঠে কেন ব্যর্থ ইস্টবেঙ্গল এফসি, তার ব্যাখ্যা এত দিনে পাওয়া গেল দলের হেড কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইনের কাছ থেকে। ব্রিটিশ কোচ যুবভারতীর গ্যালারিতে আরও সমর্থক চান। ৬৫ হাজারের গ্যালারিতে ১৫-২০ হাজার দর্শক থাকলে তাঁরা যে উজ্জীবিত হয়ে উঠতে পারেন না, তা স্টিফেন স্বীকার করে নিলেন মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষায় নামার আগে।
মুম্বই সিটি এফসি-র মতো শক্তিশালী দল তারা গড়তে পারেনি বলেও আক্ষেপ রয়েছে লাল-হলুদ বাহিনীর কোচের। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ব্রিটিশ কোচ আর কী বললেন, জানুন বিস্তারিত।
প্রশ্ন: ডুরান্ড কাপেও মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে খেলেছে আপনার দল। সেই মুম্বই আর এই মুম্বইয়ের মধ্যে তফাৎ কতটা?
স্টিফেন: ডুরান্ড কাপে চারটি ম্যাচের প্রতিযোগিতা ছিল। বেশির ভাগ দলই সেই টুর্নামেন্টকে প্রাক মরশুম প্রস্তুতি হিসেবে নিয়েছিল। আমরা তিন-চারজন বিদেশি খেলিয়েছিলাম ওই প্রতিযোগিতায়। ম্যাচটা ভালো হয়েছিল। কিন্তু তখনকার পরিবেশ-পরিস্থিতি ছিল একেবারে আলাদা। চার মাস কেটে গিয়েছে। দুই সময়ের পরিস্থিতির মধ্যে তুলনা করা যায় না। মুম্বই ম্যাচটা খুব কঠিন হবে।
আরও পড়ুন: ওড়িশার বিরুদ্ধে ৭ জনকে নিয়ে মাঠে নেমেছি, হুগোকে ঝুঁকি নিয়ে খেলিয়েছি- ফেরান্দো
প্রশ্ন: মুম্বইয়ের বৈশিষ্ট কী?
স্টিফেন: ওরা অনেক খরচ করে দল করেছে। ফলে ভালো ভালো খেলোয়াড় আনতে পেরেছে। এটাই বাস্তব। ওরা একটা ভালো দল গড়তে পেরেছে, যারা সত্যিই ভালো খেলছে। তবে আমরা বরাবরের মতোই লড়াই করব। কেউই আমাদের উড়িয়ে দিতে পারেনি। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা কিছু বাজে ভুল করেছি। তার মাশুলও দিতে হয়েছে। সব ম্যাচেই আমরা লড়াই করেছি। সহজে আমাদের হারানো যাবে না। আশা করি, যত সময় এগোবে, আমরা আরও উন্নতি করব।
প্রশ্ন: ঘরের মাঠে আরও ভালো খেললে লিগ টেবলে কি আরও ভালো জায়গায় থাকতে পারতেন না আপনারা?
স্টিফেন: গোয়ার বিরুদ্ধে হারটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ওড়িশার বিরুদ্ধে হারটাও হতাশাজনক ছিল। ঘরের মাঠে যে পয়েন্টগুলো খোয়ানো উচিত ছিল না, সেগুলো খুইয়েছি আমরা। সব মিলি বাড়তি আরও ১২-১৪ পয়েন্ট পেতে পারতাম। কাল আশা করি, ভালো কিছু করতে পারব। এর পরে বেঙ্গালুরুর মুখোমুখি হতে হবে আমাদের। ৯-১০টা ম্যাচ আরও বাকি থাকবে।
প্রশ্ন: ঘরের মাঠে আপনাদের কী সমস্যা হচ্ছে?
স্টিফেন: অনেক কারণই রয়েছে। ৭২ হাজার দর্শকের সামনে অসাধারণ পরিবেশে খেলা আর হাজার ছয়েক বা দশেক দর্শকের সামনে খেলার মধ্যে তফাৎ আছে। আমাদের সমর্থকেরা সব ম্যাচেই জয় চান। যখনই আমরা ভুল করি, তখনই তারা হতাশ হয়ে পড়ে। কিন্তু ভুল সবারই হয়। ভালো এবং খারাপ, সব সময়েই আমরা সমর্থকদের পাশে চাই। কোনও খেলোয়াড়ই ইচ্ছে করে ভুল করে না। হয়তো চাপ বা পরিস্থিতির কারণে সে ভুল করতে বাধ্য হয়। কিন্তু আমাদের খেলোয়াড়দের পাশে থাকতে হবে। যেমন আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের পাশে থাকি। আমরা কেউই একশো ভাগ নিখুঁত নই। ভুল হয় এবং ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের উন্নতি করার চেষ্টাও করি। মরশুমের শুরুতেই বলেছিলাম, আমাদের সামনে এক কঠিন মরশুম রয়েছে। আমাদের সবাইকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। উন্নতি হবে। পরের মরশুমে হয়তো তা বোঝা যাবে।
আরও পড়ুন: লিভারপুল নয়, ছেলের পছন্দের আর্সেনাল কিনতে আগ্রহী মুকেশ আম্বানি- রিপোর্ট
প্রশ্ন: আপনাদের দলের কারও চোট-আঘাত রয়েছে?
স্টিফেন: হ্যাঁ, দু-একজনের আছে। জর্ডন (ও’ডোহার্টি) কাল অনিশ্চিত। ৫০-৫০ সম্ভাবনা। হীমাংশু (জাঙরা) খেলতে পারবে না। আজকের অনুশীলনের পর আরও ভাল বুঝতে পারব। শৌভিক গত সপ্তাহে স্কোয়াডে ছিল। এই ম্যাচেও থাকবে কি না, দেখা যাক। কিরিয়াকুকে খেলানো যায় কি না, ভাবব।
প্রশ্ন: গত কয়েকটি ম্যাচে আপনার দল অনেক গোলের সুযোগ তৈরি করেছে এবং হাতছাড়াও করেছে। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট সাহসী পারফরম্যান্সের পর ওদের কোচ এসে আপনাকে অভিনন্দনও জানিয়ে যান। এই ব্যাপারটা আপনি কী ভাবে দেখছেন?
স্টিফেন: আমরা সব সময়েই গতিময় ফুটবল খেলতে ভালোবাসি। আক্রমণাত্মক, আগ্রাসী ফুটবল খেলতে চাই। কিন্তু সে রকম খেলোয়াড় দলে থাকাটা জরুরি। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা ক্লেটনের ওপর একটু বেশিই নির্ভর করছি। ওর কাউকে দরকার, যে ওকে সাহায্য করতে পারে, পাঁচ-ছ’টা গোল করতে পারে। তা হলে ওর ওপর থেকে চাপটা কমে। প্রতিপক্ষ যখন দেখে, ক্লেটন পাঁচ-ছ’টা গোল করেছে, সেম্বয়ের একটা গোল আছে, তখন তারা ক্লেটনকে দ্বিগুন মার্কিংয়ে রাখে। তখন আমাদের প্রধান খেলোয়াড়কে আমরা আর পুরোপুরি ভাবে পাইনা। এতেই সমস্যা হয়। সে জন্যই আক্রমণে আমরা দুজনকে রাখি। তা সত্ত্বেও ক্লেটনের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে আমাদের।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।