রাজেশ পানসারে
দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ইতিহাসের চাকা কি ঘোরাতে পারবে কলকাতা নাইট রাইডার্স? নাকি মরুশহরের চোরাবালিতে আরও তলিয়ে যাবেন নাইটরা? টুর্নামেন্টের শেষ চার ম্যাচের আগে আপাতত সেই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে।
ইতিহাস বলছে, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে যে লজ্জাজনক হারের মুখে পড়েছে কেকেআর, সেরকম ধাক্কা কাটিয়ে ফিরে আসার খুব একটা নজির নেই। বরং সেই রক্তক্ষরণের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে শেষপর্যন্ত টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে। কেকেআরের লজ্জা তো আরও বেশি। ২০ ওভার ব্যাট করে ১০ উইকেট না খুইয়ে আইপিএলের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রান করেছেন ইয়ন মর্গ্যানের ছেলেরা।
(আইপিএলের যাবতীয় আপডেট, লাইভ স্কোর দেখুন এখানে)
২০১৭ সাল থেকে আইপিএলে ১১ বার কোনও দল ১০০ বা তার কম রান তুলেছে। আর তা বিরাট কোহলির থেকে কে ভালো জানেন? সেই বছর কেকেআরের ১৩১ রান তাড়া করতে নেমে ৪৯ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল ব্যাঙ্গালোর। যা আইপিএলের ইতিহাসে এখনও সর্বনিম্ন স্কোর। ছ'দিন পরেই রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টের ১৫৭ রান তাড়া করতে গিয়ে ন'উইকেটে ৯৬ রানেই থেমে গিয়েছিল কোহলির দল। এমনিতেই প্রথম ছয় ম্যাচের মধ্যে মাত্র দুটি ম্যাচে জয় পেয়ে ধুঁকছিল তারা। সেই হারের ধাক্কায় তো অবস্থা আরও শোচনীয় হয়েছিল। শেষ আট ম্যাচের ছ'টিতেই হারের মুখ দেখেছিলেন বিরাটরা।
গত বছর আবার টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ৭০ রানে থেমে গিয়েছিল ব্যাঙ্গালোর। তারপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি বিরাটরা। দুটি সংস্করণে লিগ টেবিলের সবার নীচে তাঁদের জায়গা হয়েছিল।
(কেকেআরের যাবতীয় খবর, আপডেট দেখুন এখানে)
শুধু ব্যাঙ্গালোর নয়, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, কিংস ইলেভন পঞ্জাবও একই পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। ২০১৮ সালে টুর্নামেন্টের প্রথম পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই হেরেছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ানরা। এমনকী সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ১১৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে ওয়াংখেড়েতে ৮৭ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল মুম্বই। যা আইপিএলের ইতিহাসে তাদের যুগ্ম সর্বনিম্ন স্কোর। পরের ন'টি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে জয় পেলেও সেই প্রাথমিক ধাক্কা থেকে আর সামলে উঠতে পারেনি মুম্বই। শেষপর্যন্ত পঞ্চম হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায়।
সেই মরশুমেই আবার দুর্দান্ত শুরু করেছিল পঞ্জাব। প্রথম ছ'টি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে জয় পেয়েছিল প্রীতি জিন্টার দল। তারপরই বাজে ফর্ম শুরু হয়েছিল। সেই ধাক্কার মধ্যে ১২ তম ম্যাচে ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ৮৮ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল পঞ্জাব। শুরুর দিকে ভালো পারফরম্যান্সের জন্য তাঁদের সামনে প্লে-অফের সুযোগ তখনও ছিল। কিন্তু সেই ধাক্কা থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি পঞ্জাব।
একইরকমভাবে এবারও কেকেআরের সামনে প্লে-অফে ওঠার সুযোগ আছে। আর সেজন্য কোনও পারমুটেশন-কম্বিনেশনে যেতে হবে না। বরং নিজেরা জিতলেই প্রথমে চারেই শেষ করতে পারবেন মর্গ্যানরা। অন্য কোনও দলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। কিন্তু সেই কাজটা কি আদৌও পারবে কেকেআর? বিরাটদের বিরুদ্ধে হারের পর তো রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন কেকেআরের হেডকোচ ব্রেন্ডন ম্যাকাকালাম। দলের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। ম্যাচের আগে দলের খেলোয়াড়দের থেকে যে ইতিবাচক মানসিকতা এবং ইচ্ছাশক্তি দেখতে চেয়েছিলেন প্রাক্তন নাইট অধিনায়ক, তা দেখতে পাননি। আজ (শনিবার) কি সেই বাড়তি উদ্যম দেখতে পারবেন তিনি?
সেই উত্তরটা পরে মিলবে। তবে এখনও ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে কেকেআরের সামনে। আর সেজন্য সানরাইজার্স হায়দরাবাদের থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারেন নাইটরা। ২০১৭ সালে যারা পঞ্চম ম্যাচে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ৯৬ রানের বেশি তুলতে পারেননি। পরের ম্যাচগুলিতে অসাধারণ পারফরম্যান্স না হলেও কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নাররা। শেষ ১০ টি ম্যাচের মধ্যে ছ'টিতে জিতে ভালো নেট রানরেটের সুবাদে প্লে-অফে উঠেছিলেন তাঁরা। তাতে বিশ্বাস রেখে এবার কি নয়া সূচনা করতে পারবেন মর্গ্যানরা?
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।