আইপিএলের আরও একটি ম্যাচের ফলাফল গড়াল শেষ ওভার পর্যন্ত। আর ২০তম ওভারে রোমহর্ষক লড়াইয়ের পর সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে হারিয়ে বাজিমাত করল দিল্লি ক্যাপিটালস। বোলারদের দুরন্ত পারফরম্যান্সের হাত ধরে ৭ রানে জয় ছিনিয়ে নিলেন ডেভিড ওয়ার্নাররা।
শেষ ওভারে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের দরকার ছিল ১৩ রান। এই রান করাটা মোটেও কঠিন কাজ ছিল না। ডেভিড ওয়ার্নার দায়িত্ব দিয়েছিলেন বাংলার বোলার মুকেশ কুমারকে। আর শেষ ওভারে মুকেশই কামাল করলেন। প্রথম পাঁচ বলে পাঁচ রান দিলেন তিনি। আর তাতেই দিল্লির জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। শেষ বলে ৮ রান দরকার ছিল। হায়দরাবাদ কোনও রানই করতে পারল না। স্বল্প রানের পুঁজি নিয়ে লড়াই করতে নেমে মূলত বোলারদের দাপটের উপর ভর করেই নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নিল দিল্লি ক্যাপিটালস।
দিল্লির ব্যাটাররা কিন্তু বারবার হতাশ করছেন। সোমবারও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই নড়বড় করছিল দিল্লির ব্যাটাররা। আর দিল্লির ইনিংসের অষ্টম ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দরের দাপটে একেবারে কোমর ভেঙে যায় দিল্লির ব্যাটিং লাইন আপের। এই ওভারে পড়ে তিন উইকেটে। একই ওভারে ডেভিড ওয়ার্নার (২০ বলে ২১), সরফরাজ খান (৯ বলে ১০) এবং আমান হাকিমের (২ বলে ৪) ফিরিয়ে দিল্লিকে একেবারে কোণঠাঁসা করে দেন ওয়াশিংটন সুন্দর। এই ওভারে ৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন সুন্দর।
আরও পড়ুন: শার্দুলকে কেন খেলানো হচ্ছে না, বোঝার বাইরে- KKR-এর প্ল্যানিং নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ভাজ্জি
এর আগে প্রথম ওভারেই ফিল সল্টকে ফিরিয়েছিলেন ভুবনেশ্বর কুমার। সেটা দিল্লির কাছে বড় ধাক্কা ছিল। ১ বল খেলে ১০ করে ক্লাসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেছিলেন সল্ট। এর পর পঞ্চম ওভারে মারকুটে মেজাজে থাকা মিচেল মার্শকে (১৫ বলে ২৫ রান) এলবিডব্লিউ করেন টি নটরাজন। তার পর সুন্দরের দাপটে দিল্লি থরথর করে কাঁপতে শুরু করে।
এর পর মণিশ পাণ্ডে এবং অক্ষর প্যাটেল কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন। ৩৪ করে রান করেন দুই তারকাই। বাকিদের অবস্থা তথৈবচ। টানা উইকেট হারাতে থাকে তারা। ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে কোনও মতে ১৪৪-এ স্কোর টেনে নিয়ে যায় দিল্লি। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেও, হায়দরাবাদ বোলারদের দাপটে সেটা বুমেরাং হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: সিরাজ ক্ষমা চাইলেন অভব্যতার জন্য, লোমরোর মুখে শাহরুখের বুলি!
এ দিন হায়দরাবাদের বোলাররা ভালো বল করার পাশাপাশি ফিল্ডাররাও খুব তৎপর ছিলেন। দিল্লির তিন ব্যাটার রানআউট হয়েছেন। আর ভুবি ৪ ওভার বল করে ১১ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নিয়েছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দুরন্ত বোলিংয়ের নজির এটি। ওয়াশিংটন সুন্দর ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। টি নটরাজন ১টি উইকেট নিয়েছেন।
জবাবে রান তাড়া করতে নেমে দিল্লির বোলাররাও বেকায়দায় ফেলে হায়দরাবাদকে। ইশান্ত শর্মারা আসলে যতটা কম রান খরচ করা যায়, সেই চেষ্টাই করে গিয়েছেন শুরু থেকে। ওপেন করতে নেমে মায়াঙ্ক আগরওয়ালের ৩৯ বলে ৪৯ ছাড়া, প্রথম সারির ব্যাটাররা সে ভাবে নজর কাড়তে পারেননি। হ্যারি ব্রুক (১৪ বলে ৭), রাহুল ত্রিপাঠি (২১ বলে ১৫), অভিষেক শর্মা (৫ বলে ৫), অধিনায়ক এডেন মার্করাম (৫ বলে ৩) প্রত্যেকেই ব্যর্থ হন। ষষ্ঠ উইকেট হেনরিখ ক্লাসেন এবং ওয়াশিংটন সুন্দর মিলে লড়াই চালান। তবে ১৯ বলে ৩১ করে ক্লাসেন সাজঘরে ফেরেন। তখন ফের চাপে পড়ে হায়দরাবাদ। কিন্তু হাল ধরে ছিলেন সুন্দর। ১৫ বলে ২৪ করে অপরাজিত থাকেন ওয়াশিংটন সুন্দর। তবে তিনিও শেষ রক্ষা করতে পারলেন না। হায়দরাবাদ নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩৭ রান করে। শেষ ওভারের লড়াইয়ে আসল বাজিমাত করল দিল্লিই। আর দিল্লির এই জয়ে বড় কৃতিত্ব নিঃসন্দেহে বাংলার মুকেশ কুমারের। মুকেশ এ দিন ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নেমেছিলেন। কোনও উইকেট পাননি। তবে আসল কাজটাই করে গেলেন তিনি।
দিল্লির এনরিখ নরকিয়া এবং অক্ষর প্যাটেল ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। ইশান্ত শর্মা এবং কুলদীপ যাদব ১টি করে উইকেট নিয়েছেন। টানা পাঁচ ম্যাচে হারের পর প্রথমে কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং এর পর হায়দরাবাদকে হারিয়ে আইপিএলে অক্সিজেন পেল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দিল্লি ক্যাপিটালস।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।