একজন বিদেশি কোচ, যাঁর দল নির্বাচনে মাথা গলানোর অধিকার নেই, তিনি কীভাবে টিম ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেনকে দল থেকে বাদ দিতে পারেন? বোর্ডের সমর্থন ও মদত না থাকলে তাঁকে শুধু নেতৃত্ব থেকেই সরিয়ে দেওয়াই নয়, এমনকি দল থেকে ছেঁটে ফেলা সম্ভব হতো না গ্রেগ চ্যালেপের পক্ষে। টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক তথা বর্তমান বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নিজের ক্রিকেটার জীবনের সবথেকে কঠিন সময় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এমনটাই জানালেন। তাঁর স্পষ্ট মত, তাঁর সঙ্গে এমন অন্যায় আচরণে বিসিসিআইয়ের গোটা সিস্টেমই জড়িত ছিল।
গৌতম ভট্টাচার্য্যর সঙ্গে তাঁর ইউটিউব শো জিবি কর্ণারে কথা বলার সময় কোনও রকম রাখঢাক না করে সৌরভ তুলে আনলে এমন সব প্রসঙ্গ, যা অপ্রিয় মনে হতে পারে বিসিসিআইয়ের তৎকালীন প্রশাসকমহল এমনকি নির্বাচকদেরও। ২০০৫-এ সৌরভকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়ার জন্য সচরাচর কাঠগড়ায় তোলা হয় গ্রেগ চ্যাপেলকে। সৌরভ জানান, একা চ্যাপেল দায়ি ছিলেন না তাঁর বাদ পড়ার জন্য।
সৌরভ বলেন, ‘আমি একা গ্রেগ চ্যাপেলকে দোষ দিতে চাই না। অবশ্যই কোচই এটা শুরু করেছিল। তবে আমি জানি, অন্যরাও সাধু ছিল না। একজন বিদেশি কোচ, যাঁর দল নির্বাচনে কথা বলার অধিকার নেই, সে একজন ভারত অধিনায়ককে দল থেকে বাদ দিতে পারে না। আমি বুঝেছিলাম যে, গোটা সিস্টেমের সমর্থন ছাড়া এটা সম্ভব নয়। আমাকে বাদ দেওয়ার পিছনে সবাই জড়িত ছিল। তবে আমি চাপের মুখে ভেঙে পড়িনি। নিজের উপর বিশ্বাস হারাইনি। বরং নিজের ক্ষমতার উপর আমার গভীর আস্থা ছিল। সেকারণেই কামব্যাক করতে পেরেছিলাম।’
তাঁর বাদ পড়ার অধ্যায় নিয়ে সৌরভ আরও বলেন, ‘আমার কেরিয়ারের সবথেকে বড় ধাক্কা ছিল ওটা। আমার সঙ্গে চূড়ান্ত অন্যায় করা হয়েছিল। আমি জানি সবসময় ন্যায়বিচার পাওয়া যায় না। তবে তখন সেই পরিস্থিতিটা এড়ানো যেত। ক্যাপ্টেন হিসেবে জিম্বাবোয়ে থেকে দলকে জিতিয়ে ফেরার পরেই আমাকে ছেঁটে ফেলা হল!’
হতাশাজনক অধ্যায় নিয়ে মহারাজ পরক্ষণে বলেন, ‘আমি ২০০৭ বিশ্বকাপে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করার স্বপ্ন দেখছিলাম। সেটা স্বাভাবিক। কেননা তার আগের বিশ্বকাপে আমরা রানার্স হয়েছি। গত পাঁচ বছরে দল আমার নেতৃত্বে দেশে এবং দেশের বাইরে ভালো ক্রিকেট খেলছে। তখনই আমাকে হঠাৎ করে বাদ দেওয়া হল। প্রথমে বলা হল ওয়ান ডে দলে রাখা হবে না। পরে টেস্ট থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল।’
শেষে গোটা এপিসোডে চ্যাপেলের ভূমিকা নিয়ে সৌরভ বলেন, ‘কোচ হঠাৎ করেই আমার নামে নালিশ করে বোর্ডে ই-মেল পাঠায়, যেটা ফাঁস হয়ে যায়। এটা কি কাম্য ছিল? একটা ক্রিকেট দল একটা পরিবারের মতোই। পরিবারের মধ্যে মতপার্থক্য হতেই পারে। তবে সেটা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়াই উচিত ছিল। তুমি কোচ। তোমার যদি মনে হয় আমার অন্যভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা উচিত, তাহলে সেটা আমাকে বলা দরকার ছিল। যখন কামব্যাক করি, তখন চ্যাপেল আমাকে সেটা বলে। তাহলে আগে বললে কী ক্ষতি হত? আসলে এটা শুধু আমার সঙ্গেই নয়, কম-বেশি দলের সবার সঙ্গেই হয়েছিল। বুঝতে পেরেছিলাম যে, দলের সবাই একই অবস্থায় রয়েছে। কোচের শুধু আমাকে পছন্দ নাও হতে পারে। তাতে আমার দোষ রয়েছে মেনে নেওয়া যায়। তবে কোচ যদি বলে, আমার তোমাকে পছন্দ নয়, ওকে পছন্দ নয়, তাকে পছন্দ নয়, তাহলে বুঝতে হবে সমস্যাটা ওর নিজের।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।