গালওয়ান উপত্যকায় মারা গিয়েছেন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। অথচ সেই ঘটনা নিয়ে একটাও বাক্য খরচ করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তা নিয়ে মোদীকে আক্রমণ শানালেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
মঙ্গলবার গভীর রাতে একটি টুইটবার্তায় মহুয়া বলেন, ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে প্রচার চালিয়ে ২০১৯ সালে নির্বাচনে জিতেছিল বিজেপি। যার কোনও আসল প্রমাণ আমরা এখনও দেখিনি। এখন ২০ জন মৃত জওয়ান আমাদের দিকে তাকিয়ে আছেন, আর প্রধানমন্ত্রী নীরব।’
সপ্তাহখানেক ধরে প্রতিবেশী দেশগুলি একইসঙ্গে যেভাবে ভারতের উপর চাপ তৈরি করছে, তা শেষ কবে হয়েছিল, সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মহুয়া। তিনি বলেন, ‘শেষবার কখন এক সপ্তাহের ব্যবধানে এগুলি হয়েছিল? ১) উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টার সময় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ২০ জনের মৃত্যু, ২) সবথেকে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী (দেশ) কোনও আলোচনা ছাড়াই একতরফা রাজনৈতিক মানচিত্র সংশোধন করছে, ৩) চিন, পাকিস্তান, নেপাল - তিন সীমান্তে ভারতীয়দের মৃত্যু। কারণ জানতে চাওয়ার জন্য দেশবিরোধী, কীভাবে প্রশ্ন করায় রাষ্ট্রদ্রোহিতা।’
শুধু মহুয়া নয়, গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার নৃশংসতায় বিরোধীদের সম্মিলিত আক্রমণে পড়েছেন মোদী। রাহুল গান্ধী, পি চিদম্বরম-সহ বিরোধীদের একটাই প্রশ্ন - প্রধানমন্ত্রী চুপ কেন? একটি টুইটবার্তায় রাহুল বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন? তিনি কী লুকোচ্ছেন? যথেষ্ট হয়েছে। আমরা জানতে চাই কী হয়েছে। আমাদের সেনা জওয়ানদের হত্যার সাহস কীভাবে পায় চিন? আমাদের ভূখণ্ড দখল করার সাহস হয় কীভাবে?'
সেই আক্রমণের মধ্যেই মোদীর পুরনো টুইটগুলিকে হাতিয়ার করেছেন বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, ক্ষমতায় আসার আগে সরকারের বিরুদ্ধে চুপ থাকার অভিযোগ তুলতেন? এখন তিনি নিজে নীরব কেন? কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী আবার সরাসরি প্রত্যাঘাতের পক্ষে সওয়াল করেছেন। বিরোধী শিবিরের অধিকাংশের বক্তব্য, পাকিস্তানের সীমান্ত আগ্রাসন নিয়ে যেভাবে মন্তব্য করেন মোদী এবং তাঁর পারিষদরা, চিনের বেলায় তো তার সিকিভাগও দেখা যাচ্ছে না। ২০ জন জওয়ানকে চিন হত্যা করার পরও বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতি যথেষ্ট ‘নরম’। একইসঙ্গে জাতীয়তাবাদের পালে হাওয়া দিয়ে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে প্রত্যাঘাতের পথে যাওয়া হয়। আর বেজিংয়ের আগ্রাসনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র চিনা পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েই থেমে যাওয়া হয়।