দ্রুতগতিতে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’। উপকূলবর্তী এলাকায় চলছে মাইকিং। সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মানুষজনকে। এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে দক্ষিণবঙ্গে। সকাল থেকেই মেঘলা আকাশের সঙ্গে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। এই বৃষ্টিতে ভিজছে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর–সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। আর এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে যাওয়ার পথে ঝড়ের দাপটে আটকে পড়লেন প্রত্যন্ত সুন্দরবনের সন্তানসম্ভবা যুবতী। অবশেষে হাসপাতাল পৌঁছতে না পেরে গাড়িতেই এক সন্তানের জন্ম দিলেন তিনি। হিঙ্গলগঞ্জে এটাই সিত্রাং জয়ের ঘটনা।
ঠিক কী ঘটেছে হিঙ্গলগঞ্জে? স্থানীয় সূত্রে খবর, হিঙ্গলগঞ্জ থানা এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মণ্ডল। তাঁর স্ত্রী সরলা মণ্ডল সন্তানসম্ভবা ছিলেন। আজ, সোমবার সকালে তাঁর হঠাৎই প্রসবযন্ত্রণা দেখা দেয়। তড়িঘড়ি গাড়ি ভাড়া করে তাঁকে নিয়ে স্যাণ্ডেলবিল ৯ নম্বর হাসপাতালে রওনা দেন বিশ্বজিৎবাবু। কিন্তু পথে প্রবল দুর্যোগে হাসপাতালে পৌঁছনো সম্ভব হল না। অনেক চেষ্টা করেও লাভ হয়নি।
তারপর সেখানে ঠিক কী ঘটল? বহু চেষ্টা করে গাড়ি স্বরূপকাঠি বাজার পর্যন্ত পৌঁছলেও তারপর থামিয়ে দিতে হয়। অবশেষে ওখানেই গাড়ির ভিতরে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন সরলা মণ্ডল। কালীপুজোর দিন প্রাকৃতিক দুর্যোগকে উপেক্ষা করে বাংলার বুকে এল এই সন্তান। আর এই ঘটনার সাক্ষী থাকল গোটা এলাকাবাসী। যেহেতু সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকায় মণ্ডল পরিবারের বসবাস, তাই ওই যুবতী নিজের শিশুর নাম দিলেন অরণ্য।
আর কী জানা যাচ্ছে? প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে গাড়ির ভিতরে সন্তানের জন্ম হয়েছে শোনা মাত্রই তড়িঘড়ি ছুটে আসেন স্থানীয় চিকিৎসক সুব্রত মিস্ত্রি। তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন স্থানীয় দুলদুলি গ্রাম পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি বিধান মণ্ডলও। আপাতত চিকিৎসা পেয়ে মা ও শিশু দু’জনেই সুস্থ আছে বলে পরিবার সূত্রে মিলেছে খবর। এখন পরিবারে খুশির হাওয়া।