হাতে আর ১৭ দিন বাকি। তারপরই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বিজেপির নবান্ন অভিযানে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হাওড়ার ব্যবসায়ী মহল। কারণ দেখে শুনে মঙ্গলবার হাটের দিনে রাজনৈতিক কর্মসূচি লোকসানের মুখ দেখতে হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। একদিকে মঙ্গলাহাট, অন্যদিকে হাওড়া ময়দান চত্বর। এখানে জামাকাপড়ের অজস্র দোকান। তাই দুর্গাপুজোর আগে ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। তাই কার্যত এক সুরে গেরুয়া শিবির এবং তাদের নবান্ন অভিযানকে বিঁধছেন ব্যবসায়ীরা।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সূত্রে খবর, টানা দু’বছর করোনাভাইরাসের জেরে সমস্যায় পড়েছিল মঙ্গলাহাট। এই বছর ভাল ব্যবসার আশা করেছিলেন মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীরা। অনেকেই কোটি কোটি টাকার পোশাক মজুত করেছেন। দুর্গাপুজোর আগে তিনটি হাট বসাতে পারছেন ব্যবসায়ীরা। সেই তারিখগুলি হল— সেপ্টেম্বর মাসের ১৩, ২০ এবং ২৭। প্রাক–পুজোর এই বিক্রিবাটা ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফোটায়। সুতরাং তিনদিনের মধ্যে একদিন ব্যবসা মাটি হলে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি মুখে পড়তে হবে ব্যবসায়ীদের।
কেন বন্ধ থাকছে মঙ্গলাহাট? জানা গিয়েছে, হাওড়ায় দু’টি মিছিলের মধ্যে একটি হবে হাওড়া ময়দান চত্বরে। সুতরাং খোলা যাবে না হাট। প্রশাসন হাট বন্ধের নির্দেশিকা জারি না করেছে। মঙ্গলাহাট ব্যবসায়ী সমিতির অনুমান, এই ব্যবসা বন্ধের ফলে ক্ষতি হবে প্রায় ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা। এই বিষয়ে ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মলয় দত্ত বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আমাদের কোনও বিরোধিতা নেই। কিন্তু মঙ্গলবার হাওড়ায় সেই কর্মকাণ্ড হলে লক্ষ লক্ষ মানুষের ক্ষতি হয়, এটা উদ্যোক্তাদের বোঝা উচিত। সমস্যা হতে পারে আঁচ করেই অসম, ত্রিপুরা, বিহার–সহ বিভিন্ন রাজ্যের ক্রেতারা আসেননি।’
কী হতে চলেছে নবান্ন অভিযানে? আজ, বিজেপির নবান্ন অভিযান। সেখানে অশান্তি পাকানোর বিশেষ ছক কষেছে গেরুয়া শিবির। তাই নবান্ন পৌঁছনোর আগেই বিজেপিকে রুখে দিতে মজুত রয়েছে একাধিক জল কামান। মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ। হাওড়া ময়দান থেকে সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে মিছিল আটকে দিতে জিটি রোডের উপর তৈরি করা হয়েছে পুলিশের ব্যারিকেড। আবার শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে মিছিল সাঁতরাগাছিতে আটকে দিতে সকালেই গার্ড রেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হল কোনা এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ। গার্ড রেল ঝালাই করে রাস্তায় গর্ত খুঁড়ে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার কলেজ স্কোয়ারে মিছিলের নেতৃত্বে থাকছেন দিলীপ ঘোষ। মিছিল আটকাতে বিভিন্ন জায়গায় ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড রাখা রয়েছে।