কয়েকমাস আগে প্রেগন্যান্সি কিট দিয়ে পরীক্ষা করেন গৌরী নায়েক। টেস্ট কিটে দুটি লাল দাগ দেখে গর্ভবতীর চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। প্রসবের তারিখও নির্ধারিত হয়ে যায়। কিন্তু প্রসবের কয়েকদিন আগে আলট্রোসোনোগ্রাফিতে ধরা পড়ল গৌরী দেবী গর্ভবতীই নন। স্বভাবতই চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
জানা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুরের গুড়গুড়িপাল এলাকার চাঁইপুর গ্রামের বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সি গৌরি নায়েক প্রেগন্যান্সি কিটে দুটি লাল দাগ দেখে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান। সেখানে তাঁকে আলট্রাসোনোগ্রাফি পরীক্ষা না করিয়েই মা ও শিশু সুরক্ষা কার্ড দিয়ে দেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসা করাতে মেদিনীপুর কলেজ ও হাসপাতালেও যান তিনি। গৌরীদেবীকে ওষুধ ও ইঞ্জেকশন সবকিছুই দেওয়া হয়।
গত ১৩ অক্টোবর প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ দেওয়া হয়। প্রসবের কয়েকদিন আগে একটি বেসরকারি সেন্টার থেকে আলট্রোসোনোগ্রাফি পরীক্ষা করে দেখা যায় ওই মহিলা আদৌ গর্ভবতীই নন। জানা যায়, চলতি বছর মে মাসের শেষে পেটে যন্ত্রণা নিয়ে গ্রামীণ সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। মাস কয়েক আগে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল গৌরী নায়েকের। রোগী মা হতে চলেছেন এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রথমবার প্রেগন্যান্সি টেস্ট নেগেটিভ আসায় দ্বিতীয়বার ফের গৌরী নায়েককে বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করানোর পরামর্শ দেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। দ্বিতীয় টেস্টের রিপোর্টে দেখা যায় গৌরী নায়েক 'গর্ভবতী'।
গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবন হাঁসদা জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা কিট দেখেই ওই মহিলাকে কার্ড করে দিয়েছে। তাঁকে ইউএসজি পরীক্ষার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি করাননি। বেসরকারি সেন্টার থেকে ইউএসজি করিয়ে জানা গিয়েছে, তিনি আদৌ গর্ভবতী নন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মহিলার স্বামী সৌরভ নায়েক অবশ্য গোটা বিষয়টির যথাযথ তদন্তের দাবি করেছেন। যেসব ওষুধ তাঁর স্ত্রীকে খাওয়ানো হয়েছিল, তাতে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে কিনা, তা নিয়েই চিন্তিত মহিলার স্বামী।