সাইকেল হারিয়ে যাওয়ায় দরিদ্র পরিবারের এক ছাত্রীর পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল। তার বিয়ের সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছিল পরিবার। আর ঠিক সেই মুহূর্তে নিজের পকেটের টাকা দিয়ে ছাত্রীকে সাইকেল কিনে দিয়ে নজির গড়লেন মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার ওসি দেবদাস বিশ্বাস। যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন খুনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সেখানে পুলিশের এমন মানবিক মুখ দেখে আপ্লুত এলাকাবাসীরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিমা বাহাদুরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী তুহিনা আফরিনের সাইকেল কিছুদিন আগেই হারিয়ে যায়। সাইকেলে করেই নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছিল তুহিনা। এমনকি কয়েক কিলোমিটার দূরে টিউশন পড়ার জায়গাটি অবস্থিত হওয়ায় সেখানেও যেত সাইকেল চালিয়ে। তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় প্রতিদিন রিকশায় করে বা বাসে করে যাতায়াতের ভাড়া বহন করা সম্ভব ছিল না। এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, পড়াশোনায় খুবই মেধাবী তুহিনা। এদিকে, পরিবারের লোকেরা ১৮ বছরের আগে তুহিনার বিয়ে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পরিবার। এরপরেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে তুহিনা।
খবর পেয়ে তুহিনার হারিয়ে যাওয়া সাইকেল উদ্ধারের চেষ্টা করেন থানার বড় বাবু। কিন্তু, খুঁজে না পাওয়ায় নিজের পকেটের টাকা দিয়েই তুহিনাকে নতুন সাইকেল কিনে দেন বড়বাবু। তিনি নিজের সাইকেল চালিয়ে তুহিনার বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তুহিনার হাতে সাইকেল তুলে দেওয়ার পাশাপাশি তার চোখের জল মুছিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। সেই সঙ্গে, ১৮ বছরের আগে যেন তার বিয়ে না দেওয়া হয় তা পরিবারকে হুঁশিয়ারিও দিয়ে এসেছেন ওসি। বড়বাবুর কথায়, ‘মানুষের পাশে থাকার জন্য তিনি প্রতিদিনই কিছু না কিছু করে থাকেন। তবে তা নাম পাওয়ার জন্য তিনি করেন না।’