মাধ্যমিকে প্রথম দশে ছিলেন না সৌম্যদীপ সাহা। তবে উচ্চমাধ্য়মিকে সেই সৌম্যদীপই এবার একেবারে দ্বিতীয়। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৫। ৯৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছে সে। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের( আবাসিক) ছাত্র সে। বারাসত কে এস রোড বরিশাল কলোনির বাসিন্দা। তবে দীর্ঘদিন ধরেই সে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে পড়াশোনা করেছে। হস্টেলে থেকেছে। দুষ্টুমিও করেছে। কিন্তু তার মাঝে পড়াশোনা একেবারে ঠিকঠাক। আর তাতেই ধরা দিল সাফল্য।
সৌম্যদীপ সাহা বলেন, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করব এটা ভাবতে পারিনি। এরপর স্ট্যাটিসটিক্স নিয়ে অনার্স পড়তে চাই। প্রয়োজন যতক্ষণ হত ততক্ষণ পড়তাম। তার বেশি পড়তাম না। মানে কোনও সাবজেক্টে যতটা পড়ার কথা ততক্ষণ পড়তাম। তার বেশি নয়। পড়াশোনার বাইরে আমি আবৃত্তি করতে ভালোবাসি। উচ্চমাধ্য়মিকের জন্য় কিছুটা এই অনুশীলন থমকে গিয়েছিল। তবে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলাম। মাধ্য়মিকে প্রথম দশে ছিলাম না। রাজ্যে ২০ তম স্থানে ছিলাম। সেবার ৬৭৩ পেয়েছিলাম।
সৌম্যদীপ বলেন, ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে চাই না। স্ট্যাটিসটিক্স নিয়ে পড়তে চাই। হস্টেল লাইফে কোনও সমস্যা হয়নি। প্রথম রাতটা হয়তো না ঘুমিয়ে ছিলাম। তবে সকলে যেভাবে সাহায্য করেছিল তাতে সমস্যা হয়নি। ওখানকার পরিবেশ আমি মানিয়ে নিতে পেরেছিলাম।
তাকে সংবাদমাধ্য়মের তরফে প্রশ্ন করা হয়েছিল এই যে বর্তমানে চাকরি দুর্নীতি নিয়ে এত টানাপোড়েন তা নিয়ে তার কি মতামত?
সেই প্রশ্নের উত্তরে সৌম্যদীপ বলেন, আমি রাজনীতি সম্পর্কে কিছুটা অজ্ঞ। এনিয়ে কিছু মন্তব্য করতে চাই না।
সৌম্যদীপের বাবা ভোলানাথ সাহা বলেন, ও পড়াশোনার মধ্য়ে থাকত। স্যাররা ঠিক যেভাবে চলতে বলত সেটা ও ঠিকঠাক করে করত। স্যারেদেরও একটা আশা ছিল ওর প্রতি। সে ভালো কিছু করবে বলে আশা করতেন স্যারেরা। সেই কথা রেখেছে সৌম্যদীপ। আমার খুব ভালো লাগছে। স্ট্যাট নিয়ে পড়তে চায়। আমি ওর পাশে আছি। আমি চাকরি নিয়ে অত চিন্তা করছি না। আগে পড়াশোনা করে ও বড় হোক। মানুষের মতো মানুষ হোক। আগে তো মানুষ হোক। তারপর সে যেকোনও একটা কাজ করবে। কিন্তু আগে ওকে পড়াশোনা করে মানুষ হতে হবে।
মিশনের বাঁধাধরা জীবন। এক মনে পড়াশোনা। তারই মাঝে আবৃত্তির প্রতি তার ভালোবাসা। এককথায় বড় সাফল্য পেলেন সৌম্যদীপ।