পরীক্ষায় টুকলি নিয়ে দুই কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে ঝামেলা। হল মারপিট। তার জেরে আহত হয়েছেন দু'পক্ষের কমপক্ষে সাত পড়ুয়া। বিষয়টি নিয়ে শান্তিপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, পুরো বিষয়টি পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী এবং পুলিশকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের সভাপতি সম্রাট পালের দাবি, ওই ঝামেলার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।
কৃষ্ণনগর ডিএল রায় কলেজ এবং শান্তিপুর কলেজ-সহ কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজের স্নাতক স্তরের প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা ছিল। কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে আসন পড়েছে শান্তিপুর কলেজের পরীক্ষার্থীদের। আবার শান্তিপুর কলেজে কৃষ্ণনগর ডিএল রায় কলেজের আসন পড়েছে। অভিযোগ, টুকলির দাবি ঘিরে ওই দুই কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে ঝামেলা হয়। যা হাতাহাতিতে গড়ায়। এমনকী প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পালটা মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মঙ্গলবার পরীক্ষা শুরুর আগে শান্তিপুর কলেজে ঢোকার চেষ্টা করেন কৃষ্ণনগর ডিএল রায় কলেজের কয়েকজন নেতা। তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করা হয়। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে চলে আসেন শান্তিপুর কলেজের প্রতিনিধিরা। দু'পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। হয় মারপিট। মারধরের অভিযোগ তুলে পরীক্ষা বয়কটের পথে হাঁটেন কৃষ্ণগনর ডিএল রায় কলেজের প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষার্থীরা। তাঁরা দাবি করেন, শান্তিপুর কলেজের তৃণমূল কংগ্রেস ইউনিয়নের পড়ুয়া লোহার রড নিয়ে কলেজে ঢুকে পরীক্ষার্থীদের ভয় দেখাতে শুরু করেন। তবে পরে কলেজ কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে পরীক্ষায় বসেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ISC results 2023: এবছর কলেজে ভর্তির দৌড়ে CBSE পড়ুয়াদের থেকে এগিয়ে ISC-র পড়ুয়ারা
সেখানেই বিষয়টি থিতিয়ে যায়নি। বরং পালটা শান্তিপুর কলেজের পড়ুয়াদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পরীক্ষার শেষে যখন শান্তিপুর কলেজের পড়ুয়ারা ফিরছিলেন, সেইসময় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর তাঁদের গাড়ি থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনায় শান্তিপুর কলেজের তিন পড়ুয়া আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। পালটা কৃষ্ণনগর ডিএল রায় কলেজের পড়ুয়াদের দাবি, মারধরের জেরে চারজন আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।
শান্তিপুর কলেজের নিরাপত্তারক্ষীর দাবি, টুকলির জন্য প্রতি বছরই ঝামেলা হয়। ছাত্র সংসদের নেতারা টুকলির জন্য কোনও কসুর ছাড়েন না। বাধা দিলেই হুমকি জোটে। নিরাপত্তারক্ষী সুধীর্ময় ঘোষ বলেন, ‘হঠাৎ করে প্রথমেই কৃষ্ণনগর কলেজের তৃণমূল ইউনিয়নের কর্মীরা কলেজের ভিতরে জোর করে ঢুকতে চায়। আমরা বাধা দিতে গেলে আমাদের সঙ্গে দাদাগিরি শুরু করে এবং ধাক্কা দিয়ে কলেজে ঢুকে ভাঙচুর চালায়।’
আরও পড়ুন: Siliguri Polytechnic college: শিলিগুড়ি পলিটেকনিক কলেজে ABVP-র ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা
শান্তিপুর কলেজ তৃণমূল ইউনিয়নের কর্মী তথা নদিয়া জেলা ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি রূপম কর বলেন, ‘যে সময় এই ঘটনাটি ঘটে তখন আমাদের ইউনিয়নের কেউ এখানে উপস্থিত ছিল না। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ হচ্ছে পুরোটাই ভিত্তিহীন। তার কারণ সাধারণভাবেই পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার্থী ছাড়া কলেজের ভিতরে কারও প্রবেশ করার অনুমতি থাকে না। তবে কিছু একটা কলেজে ঘটেছে। যাঁরা ভাঙচুর করেছেন, তাঁরা কারা, সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে।’ কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের সভাপতির দাবি, বিষয়টির সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। শিক্ষাক্ষেত্রে এরকম ঘটনা একেবারেই কাঙ্খিত নয়।
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)