পুজোর আগে রাজ্যে ডেঙ্গি অবস্থা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন জেলা তো বটেই কলকাতাতেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি। পুরসভার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধুমাত্র সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে ১২৭০ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। যা তারও আগের সপ্তাহগুলির অনেকটাই বেশি বলে জানিয়েছে পুরসভা। সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে ৯৬০ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারও এক সপ্তাহ আগে সাপ্তাহিক ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কম ছিল। এই অবস্থায় কলকাতায় এবছর মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৬০০০ ছাড়িয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গিতে প্রাণহানি বন্ধ করতে দিনরাত ভুলে পরিশ্রম করুন, সচিবদের নির্দেশ মমতার
সাধারণত প্রতিবছর সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি থাকে। এ বছর সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের থেকে অনেকটাই বেশি বলে পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে। এই অবস্থায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পুরসভার আধিকারিকদের কপালে। ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুরসভার তরফে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করা হয়েছে। পাশাপাশি নাগরিকদের নিয়মিত সচেতন করা হচ্ছে। পুরসভার ভেক্টর কন্ট্রোল কর্মীরা ৬টি বোরো এলাকায় নিয়মিত কাজ করছেন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০, ১১ এবং ১২ নম্বর বোরোর অধীনে নিউ আলিপুর, লেক গার্ডেন, ঢাকুরিয়া, গল্ফগ্রিন, যাদবপুর, বাঁশদ্রোণি, বাঘাযতীন, কসবা, গড়ফায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
এর পাশাপাশি বেহালা জোকার কয়েকটি এলাকায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হচ্ছে। উত্তর কলকাতার গিরিশ পার্ক, বড়বাজার, কলেজ স্ট্রিট, আমহার্স্ট স্ট্রিট, এপিসি রায় রোড, বিধান সরণি, জোড়াসাঁকো এবং অন্যান্য এলাকাতেও ডেঙ্গি বাড়ছে। সেখানে নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছে ভেক্টর কন্ট্রোল উইং।
মধ্য কলকাতার আশেপাশের এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে শিয়ালদহ, এন্টালি, তালতলা, রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড, রিপন স্ট্রিট এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা। এই এলাকাগুলিতেও কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ১০ এবং ১২ নম্বর বোরোতে ডেঙ্গি অবস্থা উদ্বেগজনক। ১০ নম্বর বোরোর অধীনে ঢাকুরিয়া, বাঘাযতীন, বাঁশদ্রোণি, রিজেন্ট এস্টেট এবং যাদবপুরের মতো এলাকাগুলিতে ক্রমাগতভাবে ডেঙ্গি বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গড়ফা, কসবার মতো ইএম বাইপাস সংলগ্ন অঞ্চলগুলি, পূর্বাচল, মুকুন্দপুর, নয়াবাদ এবং আনন্দপুরকেও স্ক্যানারের আওতায় রাখা হয়েছে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্বাস্থ্য ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগকে আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া কোনও জমি বা পরিত্যক্ত বাড়িতে আবর্জনা থাকলে সেক্ষেত্রে সম্পত্তির মালিককে তিন দিনের মধ্যে আবর্জনা পরিষ্কার করতে বলা হচ্ছে। আবর্জনা পরিষ্কার না করা হলে জায়গার মালিককে জরিমানা করছে কলকাতা পুরসভা।