মাথায় হাত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আজকেই হাই কোর্টের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে কুন্তল ঘোষের চিঠির প্রেক্ষিতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি এবং সিবিআই অভিষেককে জেরা করতে পারবে। এরই সঙ্গে আজ অভিষেকের ওপর ২৫ লাখ টাকার জরিমানা চাপিয়ে দিল উচ্চ আদালত। অভিষেকের পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষকেও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মোট ৫০ লাখ টাকা জরিমানার নির্দেশ শোনান বিচারপতি অমৃতা সিনহা। কিন্তু কেন এই জরিমানা? অভিষেক ও কুন্তলের দায়ের করা আবেদন খারিজ হওয়ার কারণেই এই জরিমান।
উল্লেখ্য, এর আগে কুন্তলের চিঠির প্রেক্ষিতে অভিষেককে জেরা করা যাবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ। তবে অভিষেকের সেই আবেদনের কোনও সারবত্তা খুঁজে পায়নি আদালত। কোনও মামলার আবেদনে যদি আদালত সারবত্তা না খুঁজে পায়, তাহলে আবেদনকারীর ওপর জরিমানা চাপাতে পারে আদালত। এই ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। এদিকে কুন্তলকে ঠিক একই কারণে জরিমানা দিতে বলা হয়েছে উচ্চ আদালতের তরফে। উল্লেখ্য, কুন্তলের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলাটিও খারিজ হয়েছে। তাই তাঁকেও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠিতে উল্লেখ ছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। সেই প্রেক্ষিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, অভিষেককে ইডি ও সিবিআই জেরা করতে পারবে। তবে সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে স্বস্তি পেয়েছিলেন অভিষেক। সেই মামলার এজলাস বদল হয়। তবে এজলাস বদলালেও নির্দেশ একই থেকে গেল। বিচারপতি অমৃতা সিনহা আজ জানিয়ে দিলেন যে ইডি এবং সিবিআই এই চিঠি নিয়ে অভিষেককে জেরা করতে পারবে। এর আগে এই মামলায় অভিষেককে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিনহা। এদিকে এর আগে এই মামলায় অভিষেককে রক্ষাকবচও দেননি বিচারপতি সিনহা। এদিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যুক্ত হতেই মামলা থেকে অব্যহতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাঁর সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়।
এর আগে যুব তৃণমূলের সমাবেশে অভিষেক দাবি করেছিলেন, নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর নাম বলানোর জন্য ধৃতদের ওপর চাপ দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। এরপরই কুন্তল ঘোষ প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ জানান যে তাঁকে দিয়ে অভিষেকের নাম বলানোর জন্য চাপ দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, দ্রুত কুন্তল ও অভিষেককে জেরা করা উচিত তদন্তকারীদের। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যান অভিষেক। সেই মামলার প্রেক্ষিতে সেই নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাটি সরানো হয় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে। তবে তাঁর নির্দেশই বহাল থেকেছে এই মামলায়।