বিড়ম্বনার পর বিড়ম্বনা। অস্বস্তির পর অস্বস্তি। এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বঙ্গ– বিজেপির। কারণ প্রথমে তাঁদের সূত্রেই খবর বেরিয়েছিল, ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট টিমের। পরে তা খারিজ করে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তারপর খসড়া তালিকার কথা সামনে আসে। সেটা খারিজ করে দেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। এবার নতুন বছরে আরও একটি বোমা ফাটালেন দিলীপ ঘোষ। যেখানে অমিত শাহ, শুভেন্দু অধিকারী থেকে সুকান্ত মজুমদাররা বলছেন, টার্গেট ৩৫টি লোকসভা আসন বাংলা থেকে, সেখানে দিলীপ ঘোষের মুখে শোনা গেল একেবারে বিপরীত অঙ্ক। তাতেই বাড়ল অস্বস্তি।
কেন অস্বস্তি তৈরি হয়েছে? ২০২৪ সাল পড়তেই প্রথমদিনে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন বিজেপির মেদিনীপুরের সাংসদ। আর নতুন বছরের প্রথম দিনে সাংবাদমাধ্যমের সঙ্গে মুখোমুখি হন তিনি। তখন দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘নিশান একদম পরিষ্কার, ২০২৪ সালে ২৫টা আসন। সেই দিকেই তাকিয়ে এগোচ্ছি আমরা। আমাদের কর্মীরাও সেইদিকে তাকিয়ে লড়াই করছেন। গতবছর আমরা অনেক ঘাত–প্রতিঘাতে কাটিয়েছি। নতুন বছরের সূর্যোদয় দেখলাম আজকে। সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। নতুন বছর যেন ভাল কাটে, শান্তিতে কাটে।’ সুতরাং ৩৫ সংখ্যা একবাক্যে খারিজ করে দিলেন বিজেপি সাংসদ।
কেন এমন বললেন দিলীপ? নতুন বছরে ২৫টি আসন বলে দিলীপ ঘোষ বাংলা থেকে ২৫টি আসন জেতার কথাই বলতে চেয়েছেন। আর সেখানেই প্রশ্ন উঠছে। অমিত শাহ ও জেপি নড্ডা ৩৫টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে গিয়েছেন। সে কথা বিজেপির সব নেতার মুখেই শোনা যাচ্ছে। প্রত্যেকটি সভা–সমাবেশ থেকে সুকান্ত–শুভেন্দুকে ৩৫টি আসন জেতার কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। সেখানে দিলীপ ঘোষের মুখে ২৫টি আসনের কথা শোনা গেল। যা নিয়ে অস্বস্তি বেড়েছে বঙ্গ–বিজেপির। আসলে ওই যে খসড়া তালিকা প্রকাশ পেয়েছে সেখানে দিলীপ ঘোষের লোকসভা কেন্দ্র বদলের উল্লেখ ছিল। মেদিনীপুরের বদলে সেটা হয়ে গিয়েছে ডায়মন্ডহারবার। এটা যাঁরা করেছেন তাঁদের জবাব দিতেই এমন অস্বস্তিতে ফেললেন দিলীপ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রয়েছে বাড়তি বন্দি, সমস্যা সমাধানে মুক্ত সংশোধনাগারের ভাবনা
আর কী জানা যাচ্ছে? ২০২৩ সালে সিউড়িতে এক জনসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে বাংলার ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে তাঁদের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩৫। এখন সেটাই বলছেন বাকি বিজেপি নেতারা। বিজেপি আইটি সেলের সঙ্গে বৈঠকে সম্প্রতি কলকাতায় এসে অমিত শাহ বার্তা দেন, ‘২০২৪ সালে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ৩৫টির বেশি আসন পাবে। ৩৫টি আসন দিন, মোদীজি সোনার বাংলা গড়বেন।’ তারপর দিলীপ ঘোষের ২৫টি আসনের সংখ্যাতত্ত্ব সব গুলিয়ে দিল।