বিনা অপরাধে তাঁকে ওপার বাংলায় জেল খাটতে হয়েছিল প্রায় ১৭ বছর। পরে বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত বেকসুর খালাস করলেও বর্তমানে তিনি বারুইপুরের জেলে বন্দি রয়েছেন। সব মিলিয়েও ২২ বছরের বেশি সময় ধরে বিনা দোষে জেলে রয়েছেন পেশায় মৎসজীবী চিত্ত গায়েন। তাঁকে মুক্তি দিতে অবশেষে হস্তক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট। তিনি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কুমিরমারির বাসিন্দা।
সম্প্রতি তাঁর মুক্তি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আদালত বান্ধব তাপসকুমার ভঞ্জ। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে চিত্ত সত্যি সত্যি কী নির্দোষ? সেই সংক্রান্ত তথ্য পেতে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট, রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং ডেপুটি হাইকমিশনের কাছে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবে ডিভিশন বেঞ্চ।
তাপস বাবু জানান, একদা মাছ ধরতে গিয়ে ওপার বাংলায় সীমানায় পৌঁছে গিয়েছিলেন চিত্ত গায়েন। তখন তাঁকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশ পুলিশ। সালটা ছিল ১৯৯৯। বাংলাদেশ পুলিশের দাবি ছিল, তাঁর কাছে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্টুজ উদ্ধার হয়েছিল। এরপরে চিত্ত গায়েনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অস্ত্র আইন-সহ আরও বেশ কিছু ধারায় মামলা রুজু হয়। ২০০৩ সালে বাংলাদেশের নিম্ন আদালত সেই মামলায় চিত্ত গায়েনকে দোষী সাব্যস্ত করে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। পরে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় চিত্ত গায়েনের পরিবার। সেখানেও ধীরগতিতে চলে মামলা। অবশেষে ২০১৯ সালে পদ্মাপারে আইনি লড়াই শেষ হয়। তাঁকে বেকসুর খালাস করে মুক্তি দিয়েছিল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট। তবে ওদেশের আদালত তাঁকে মুক্তি দিলেও আইনি জটিলতায় বর্তমানে তিনি বন্দি রয়েছেন বারুইপুর সংশোধনাগার। তাঁর নম্বর ১১১। তাপস বাবুর বক্তব্য, ‘বিনা অপরাধে এতদিন জেলে কাটানোর জন্য ক্ষতিপূরণের চেয়ে আবেদন জানাব।’