আসানসোলে আয়োজিত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলার কারণে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এই আবহে প্রশ্ন উঠেছে, এই বিশৃঙ্খলার দায় কার? সরাসরি না বললেও শুভেন্দু অধিকারী পুলিশের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তবে আজ সকালে আসানসোলের ঘটনা নিয়ে নিজের দলীয় সতীর্থকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার সকালে দিলীপ ঘোষের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘দায় বিরোধী দলনেতারও।’ উল্লেখ্য, এর আগে ‘মর্নিং ওয়াক’ নিয়ে শুভেন্দু-দিলীপ তরজায় অস্বস্তিতে পড়েছিল বিজেপি। এই আবহে বিরোধী দলনেতার ঘাড়ে দায় চাপিয়ে ফের একবার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আনলেন দিলীপ ঘোষ।
বিজেপি সাংসদ আজ বলেন, ‘দান খয়রাতি মানবতার অপমান। গরিবদের সাহায্য করার আরও অনেক উপায় আছে। এই ঘটনাকে সমর্থন করি না। দায় বিরোধী দলনেতারও। শুধু পুলিশের উপর ভরসা রাখা ঠিক নয়। আরও প্রস্তুতি দরকার ছিল।’ এর আগে শুভেন্দু বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘আমি এই ঘটনার জন্য কাউকে দোষারোপ করছি না। তবে আমি চলে আসতেই পুলিশ নিরাপত্তার বন্দোবস্ত তুলে নেওয়ায় ওই বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে।’
প্রসঙ্গত, বুধবার আসানসোল পুরনিগমের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছিল শিবচর্চার অনুষ্ঠান। সেখানেই কম্বল বিতরণের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এই ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলর হলেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়রের জিতেন্দ্র তেওয়ারির স্ত্রী চৈতালি তেওয়ারি। সেখানেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে চাঁদমনি দেবী (৪৫), প্রীতি সিং (১২), ও ঝালি বাউড়ির (৬০)। ঘটনায় আহত হন ৭ জন।
এদিকে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার সুধীর কুমার নীলকান্তমের দাবি, অনুষ্ঠানের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি পুলিশের কাছে। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর আসানসোল হাসপাতালে যান পুলিশ কমিশনার। প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিরোধী দলনেতা আসানসোলে আসছেন বলে খবর ছিল। কিন্তু কী অনুষ্ঠানে হবে তা বিস্তারিত ভাবে পুলিশকে জানানো হয়নি। তবে কমিশনারের এহেন দাবির পরই শুভেন্দু অধিকারী আসানসোল পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী চৈতালি তেওয়ারির লেটারহেডে লেখা একটি চিঠি টুইট করেন। সেই চিঠিতে শিবচর্চা ও কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানের জন্য আসানসোল থানার কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল গত ৩ ডিসেম্বর। পাশাপাশি শুভেন্দু অভিযোগ করেন, তিনি অনুষ্ঠানস্থল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকে পুলিশ সরিয়ে নেওয়া হয়।