বালিগঞ্জ কাণ্ডে রাজ্যের প্রভাবশালী এক মহিলাকে খুঁজছে ইডি। এই কোটি টাকার পিছনে এক রহস্যময়ী নারী আছে বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। যিনি আমলা মহলে বেশ ঘনিষ্ঠ। এই রহস্যময়ী নারীর খোঁজ পেলেই কোটি টাকা উদ্ধারের তদন্ত অনেকটা এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন ইডি’র অফিসাররা। তদন্তকারীদের দাবি, শরৎ বোস রোডের গেস্ট হাউস বিক্রির ‘ডিল’ করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ওই মহিলার। এমনকী একাধিক অসাধু লোকের কালো টাকা সাদা করতে তিনি সাহায্য করেছেন। কিন্তু তাঁর পরিচয় এখনও রহস্যাবৃত। ওই মহিলাকে এখন হন্যে হয়ে খুঁজছেন ইডির দুঁদে অফিসাররা বলে সূত্রের খবর।
ঠিক কী তথ্য পেয়েছে ইডি? ইডি সূত্রে খবর, রাজ্যের এক মন্ত্রীর বেআইনি আয়ের টাকা দেখে রাখতেন রিয়েল এস্টেট সংস্থার মালিক বিক্রম শাকারিয়া। ওই গেস্ট হাউস মালিকের সঙ্গে মোবাইলে বিভিন্ন ব্যক্তির কথোপকথনের সূত্র ধরেই হদিশ মেলে এই রহস্যময়ী নারীর। এই মহিলা বিক্রম শাকারিয়ারও ঘনিষ্ঠ। জমি–বাড়ি কেনাবেচায় মধ্যস্থতা করেন। প্রশাসনের উপরমহলেও তাঁর ভাল যোগাযোগ। সেই যোগাযোগ তিনি ব্যবসার কাজে লাগাতেন। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে ইডি জানতে পেরেছে, গেস্ট হাউসটি বিক্রির বিষয়ে মালিককে বুঝিয়েছিলেন ওই মহিলা। ঘনিষ্ঠ এক প্রোমোটারের সঙ্গে যোগাযোগও করিয়ে দেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? সূত্রের খবর, পাঁচ মাস আগে দক্ষিণ কলকাতার একটি অফিসে গেস্ট হাউস মালিকের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়। সেখানে বিক্রমও ছিলেন। মহিলা ও তাঁর প্রোমোটার যোগাযোগ করেন মনজিত সিং গ্রেওয়াল ওরফে জিট্টি ভাইয়ের সঙ্গে। জিট্টি যে প্রভাবশালীদের অবৈধ কালো টাকা দেখভাল করেন সেটা দু’জনেই জানতেন। তাই ধাবামালিক গেস্ট হাউস কিনতে মনস্থির করলে প্রোমোটারের অফিসে মনজিত–সহ সবাইকে ডাকেন সেই রহস্যময়ী। গেস্ট হাউসের মালিক ১২ কোটি টাকা দাম চান। তখন প্রভাবশালীদের নাম করে চাপ দিয়ে তাঁকে ৯ কোটিতে রাজি করানো হয় বলে অভিযোগ। বিনিময়ে মোটা টাকা কমিশন পান ওই রহস্যময়ী নারী। যার খোঁজ করছেন ইডি’র অফিসাররা।
তারপর ঠিক কী ঘটল? ইডি তথ্য পেয়েছে, গেস্ট হাউসটির রেজিস্ট্রি হয় নয়া মালিকের নামে। ওই দিনই নগদ নিয়ে যাওয়া হয়। আর লেনদেনে যুক্ত ছিল তিনটি গাড়ি। একটি বিক্রম শাকারিয়ার অফিসের। বাকি দু’টি ওই তরুণী এবং প্রোমোটারের। তিনটি গাড়ি হরিশ মুখার্জি রোডে একটি হোটেলে যায়। মনজিতই নগদ টাকা তিন ভাগে ভাগ করে তুলে দেন। একটি গাড়ি চলে যায় বিক্রমের অফিসে। অন্য দু’টি যায় ওই মহিলার প্রোমোটার বন্ধু এবং বিক্রমের এক ঘনিষ্ঠের কাছে। যার জন্য রহস্যময়ী নারীর খোঁজ বেসি জরুরি।