করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘হোম কোয়ারেন্টাইন’–এর সিদ্ধান্ত মেনে সাফল্য পেয়েছিল গোটা দেশ। এবার পুলিশ মহলের সংস্কারে মমতার দেখানো পথে হাঁটল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর মন্ত্রক। গতকাল, সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর কাছে ‘হোম মিনিস্ট্রি’ থেকে একটি চিঠি এসেছে। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, শৈশব রক্ষায় প্রতি জেলায় এবং শহরে ‘স্পেশাল জুভেনাইল পুলিশ ইউনিট’ তৈরি হোক। এই কথা সবার আগে শোনা গিয়েছিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। এবার সেটাই লেখা হল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের চিঠিতে।
কেমন হবে স্পেশাল জুভেনাইল পুলিশ ইউনিট? চিঠি থেকে জানা গিয়েছে, ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে এই ইউনিট গড়ে উঠবে। সেখানে কম করে একজন মহিলা–সহ দু’জন সমাজকর্মী রাখতে হবে ইউনিটে। পাশাপাশি প্রত্যেক থানায় একজন এএসআই পদমর্যাদার ‘চাইল্ড ওয়েলফেয়ার পুলিশ আধিকারিক’ থাকবেন। এই মর্মে ইউনিট তৈরি করার কথা লেখা চিঠি নবান্নর পাশাপাশি দেশের সব মুখ্যসচিবকে পাঠিয়েছে অমিত শাহের মন্ত্রক।
ঠিক কী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী? পুলিশের কাজে সাহায্য করতে সমাজকর্মী, শিক্ষক বা সাংবাদিকদের সামিল করার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক প্রশাসনিক সভায় এমন ঘোষণাও করেছেন তিনি। রাজ্য পুলিশের ডিজিকে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশ ইতিমধ্যে কার্যকর করেছে নবান্ন। সেখানে সোমবার নয়াদিল্লি থেকে আসা চিঠিতে নতুন কিছু নেই বলে মনে করছেন নবান্নের প্রশাসনিক কর্তারা। রাজ্যের শিশু সুরক্ষা মিশন জানিয়েছে, তারা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে শিশু সংক্রান্ত বেআইনি কাজ ঠেকাতে সমাজকর্মীদের সামিল করেছে। বাল্য বিবাহ, শিশু শ্রম, শিশু নিগ্রহ, যৌন হেনস্তা এবং শিশু শিক্ষার অধিকার রক্ষায় সমাজকর্মীদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করে রাজ্য কমিশন। মহিলা সমাজকর্মীরাও এতে আছেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? নবান্ন সূত্রে খবর, ২০১৫ সালের ‘জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট’ মোতাবেক পুলিশের সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রত্যেকটি থানায় ‘চাইল্ড ওয়েলফেয়ার পুলিশ অফিসার’–সহ ‘জুভেনাইল পুলিশ ইউনিট’–এর সবার নাম এবং মোবাইল নম্বর টাঙিয়ে রাখার কথা বলা হয়েছে। জেলা এবং শহরে যে পুলিশ ইউনিট তৈরির কথা বলা হয়েছে। সেখানের সদস্যদের বিশেষ প্রশিক্ষণেরও প্রস্তাব রয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা এবং শহরে এই ধরনের সামাজিক প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। পুলিশি সংস্কারের ক্ষেত্রে যে গোটা দেশকে পথ দেখিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা, তার ফের প্রমাণ মিলল।