যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্য়ু কার্যত গোটা সিস্টেমকেই প্রশ্নচিহ্নের সামনে এনে দাঁড় করেছে। এক লহমায় শেষ হয়ে গিয়েছে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের স্বপ্ন।বলা হচ্ছে হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে স্বপ্নদীপের। সেই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। তবে এবার সেই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের নিয়ে বৈঠক ডাকলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
অধ্যাপকদের পাশাপাশি মনোরোগ চিকিৎসক ও মনোবিদকেও ডেকে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই এনিয়ে দফায় দফায় খবর নেন রাজ্য়পাল। তারপর বৃহস্পতিবার তিনি নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান। কিন্তু কীভাবে মৃত্যু হল স্বপ্নদীপের? কেন নগ্ন অবস্থায় তার দেহ উদ্ধার হল? এটা খুন নাকি আত্মহত্যা এসব নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। তবে এসবের মধ্য়েই সামনে আসছে একাধিক বিশ্ববিদ্যায়লে ইন্ট্রোর নাম করে জুনিয়রদের উপর সিনিয়রদের অত্যাচারের কথা।
এদিকে গোটা ঘটনায় এবার রাজনৈতিক চাপানউতোরও তুঙ্গে উঠেছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার সরাসরি রাজ্য সরকার ও রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তিনি নিজেও অধ্যাপক। সেক্ষেত্রে একজন ছাত্রের এই মৃত্যুতে তিনি নিজেও আঘাত পেয়েছেন।
সুকান্ত মজুমদার টুইট করে লিখেছেন, প্রশাসনিক মদত ছাড়া টিএমসিপি, এসএফআই, ডিএসএফের মতো ছাত্র সংগঠনগুলো রাগিংয়ের মতো ঘৃণ্য অপরাধ করতে পারে না। নিজের প্রাণ দিয়ে স্বপ্নদীপকে তার মূল্য চোকাতে হল। সেই সঙ্গে তিনি লিখেছেন ধিক্কার মুখ্যমন্ত্রী।
স্বপ্নদীপের মৃত্য়ু শুধু স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে সেটাই নয়, স্বপ্নদীপের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পারস্পরিক তরজা রাজনীতির জলকেও ঘোলা করে দিয়েছে। আর সেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন রাজনীতির কারবারীরা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দাবি, যে কোনও ঘটনাতেই রাজ্যের দোষ খুঁজে পাচ্ছে বিজেপি। গাছের পাতা নড়লেও বিজেপির দোষ। সরকারের উপর দোষ চাপানোর তাড়ায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি ভুলে গিয়েছেন যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এখন সরাসরি আচার্যের অধীনে রয়েছে। এই ঘটনা আসলে রাজ্যপালের ব্যর্থতা।
কে ব্যর্থ, কতটা ব্যর্থ, কে সফল, কতটা সফল তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষন হচ্ছে। হয়তো রাজনৈতিক ফায়দাও পাবেন একপক্ষ। আর স্বপ্নদীপের মতো ছাত্রদের চিরদিন হারিয়ে যেতে হবে এভাবেই। কেন এভাবে চলে যেতে হয় স্বপ্নদীপদের সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে বাংলা।