এখন দুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই কারা টিকিট পাবেন আর কারা পাবেন না তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে। কয়েকটি জনসভা থেকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, কোনও দাদার জলের বোতল বয়ে কিংবা দাদার অনুগামী হয়ে মুখ দেখিয়ে প্রার্থী হওয়া যাবে না। পঞ্চায়েতে প্রার্থী হতে গেলে প্রয়োজন হবে মানুষের শংসাপত্রের। এলাকার মানুষ যেমন প্রার্থীকে দেখতে চান, ঠিক তেমনই প্রার্থী করা হবে।—এখন এই ফর্মূলায় প্রার্থী বাছাই করার কাজ শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
আর কী ব্যবস্থা করা হয়েছে? পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই সংক্রান্ত বিষয়ে মতামত জানানোর জন্য একটি মোবাইল নম্বরও দিয়েছেন অভিষেক। যার জেরে তৃণমূল কংগ্রেসের গ্রামীণ স্তরে মুখ কারা? কাদের ভাগ্যে শিখে ছিঁড়তে চলছে পঞ্চায়েতের টিকিটের? এইসব প্রশ্ন নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস চাইছে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির এমন প্রার্থীকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে দাঁড় করাতে, যাঁর প্রতি পূর্ণ আস্থা জ্ঞাপন করতে পারবেন এলাকার মানুষজন।
কেন এমন আলোচনা শুরু হয়েছে? রাজ্যে এখন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহ তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাই দলীয় প্রার্থী ঠিক করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। তখনই প্রার্থী বাছাই পর্বে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস ইতিমধ্যেই দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি নিয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিবিড় জনসংযোগ স্থাপন করছেন দিদির দূতরা। তবে সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলাফল নিয়ে নতুন করে ভাবিয়েছে ঘাসফুল শিবিরকে। তাই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হয়ে গিয়েছে।
তাহলে কারা প্রার্থী হবে? ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জেলায় পঞ্চায়েত প্রধানদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। যে সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধানদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তৃণমূল কংগ্রেস এটা স্পষ্ট করেছে, দুর্নীতির সঙ্গে কোনওরকম আপোষ নয়। ব্লক, অঞ্চল থেকে মতামত নিয়ে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। একটি তালিকা তৈরি করে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হচ্ছে। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দু–তিনটি বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এক, এলাকার মানুষ চেনেন এমন লোককে খুঁজে বের করা। দুই, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে যিনি সারাবছর মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে পারবেন। তিন, গতবার জিতেছিলেন কিন্তু পরবর্তী সময়ে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন তাঁদের চিহ্নিত করা। যে ব্যক্তি ‘পপুলারিটি লস’ করেছেন তিনি টিকিট পাবেন না। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তরুণ প্রজন্ম এবং মহিলাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে অনেক আসনে প্রার্থী করা হবে।