করোনাভাইরাস রাজ্যজুড়ে দাপট দেখাচ্ছে। তাই দক্ষিণ ২৪ পরগণায় গিয়ে রিভিউ বৈঠক করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকের পর বলেছিলেন, এখন মেলা, খেলা, ভোট সব বন্ধ রাখা উচিত। দু’মাস সব বন্ধ রাখা উচিত। মানুষ বাঁচলে আমরা বাঁচব। এটা অবশ্য আমার ব্যক্তিগত মত। এবার এই ব্যক্তিগত মতকেই খোঁচা দিয়ে বসলেন দলের বর্ষীয়ান আইনজীবী তথা সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে অভিষেকের নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ডহারবারে ৩০ হাজার মানুষের করোনাভাইরাস পরীক্ষা হয়। দিনের শেষে সংখ্যাটি পৌঁছয় ৫৩ হাজারে। তার মধ্যে পজ়িটিভ ১১৫১ জন। এই গোটা কাজের জন্য সাংসদ হিসেবে নানা জায়গা থেকে সাধুবাদও পেয়েছেন অভিষেক। কিন্তু সেই সাফল্যের মাঝে দলের সাংসদের কাছ থেকেই মিলল খোঁচা।
যদিও আর এক বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় বুধবার বলেছিলেন, অভিষেকের ব্যক্তিগত মতই দলের গাইডলাইন। তাতে রাজ্য–রাজনীতি বেশ তপ্ত হয়ে উঠেছিল। কারণ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো গঙ্গাসাগর মেলার পক্ষে সওয়াস করেছিলেন। সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতকে দলের গাইডলাইন বলায় একটা চিড় দেখা গিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
ঠিক কী বলেছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়? আজ, বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ বলেন, ‘দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদটি সর্বক্ষণের। তাই এই পদে থেকে কারও ব্যক্তিগত কোনও মত থাকতে পারে না। অনেক বিষয়ে আমারও ব্যক্তিগত মত আছে। দলীয় শৃঙ্খলার কারণেই তা প্রকাশ্যে বলা যায় না। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধাচারণ। এভাবে রাজ্য সরকারকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। বর্ষবরণের দিনে ডায়মন্ড ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন যেখানে হয়েছিল সেখানে কয়েক হাজার মানুষ ছিলেন। মুম্বইয়ের গায়ককে এনে জলসা হয়েছিল। সেখানে কি সংক্রমণের সম্ভাবনা ছিল না?’
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যে স্পষ্ট এখন দল দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ছে। একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোষ্ঠী তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গোষ্ঠী তৈরি রয়েছে। ফলে এভাবে চললে দলের ভাঙন হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এমনকী তাতে বিজেপি ফায়দা তুলতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।