পরীক্ষার আগেরদিনই পাটনায় নিটের প্রশ্নপত্র পেয়ে গিয়েছিলেন ২০ জন পড়ুয়া। তদন্তের সঙ্গে যুক্ত এক শীর্ষ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে বিহারের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওই পড়ুয়াদের পাটনায় নিয়ে আসা হয়েছিল। রাখা হয়েছিল রামকৃষ্ণনগরের খেমনিচক এলাকার একটি বাড়িতে (হস্টেলও বলা যেতে পারে)। সেখানেই তাঁদের হাতে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকার (NEET-UG) প্রশ্নপত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল। ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, জেরার সময় ধৃত এক ব্যক্তি ফাঁস করে দেয় যে ২০ জন প্রার্থীকে পরীক্ষার আগেরদিনই নিটের প্রশ্নপত্র দিয়েছিল সমস্তিপুর জেলার বাসিন্দা সিকন্দর ইয়াদাভেন্দু নামে একজন। সেইসঙ্গে কোন প্রশ্নের কী উত্তর হবে, তাও দিয়েছিল বলে জেরায় দাবি করেছেন অভিযুক্ত।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, যে ব্যক্তি জেরার সময় সেই বিষয়টি জানিয়েছে, তাকেও গত ৫ মে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে চার পরীক্ষক-সহ সেদিন ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জেরা চালানো হচ্ছে। তদন্তের সঙ্গে যুক্ত ওই আধিকারিক বলেন, 'জেরার সময় এক অভিযুক্ত জানিয়েছে যে পাটনা বাইপাসের কাছে একটি দোতলা বাড়ির দুটি-তিনটি ভাড়া নিয়েছিল সিকন্দর ইয়াদাভেন্দু। তাকেও ৫ মে গ্রেফতার করা হয়েছে।'
ওই সিকন্দরই পুরো ঘটনার মাস্টারমাইন্ড?
পুলিশের তরফে আপাতত সেই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে সিকন্দর যে একটা ‘বড় মাছ’ ছিল, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই সংশ্লিষ্ট মহলের। শীর্ষ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জেরায় অভিযুক্ত জানিয়েছে যে নিট পরীক্ষার আগেরদিন (৪ মে) দুটি গাড়িতে করে ২০ জনের বেশি প্রার্থীকে নিয়ে এসেছিল সিকন্দর। পরবর্তীতে প্রার্থীদের হাতে নিটের প্রশ্নপত্র এবং উত্তর তুলে দিয়েছিল। যে গাড়ি ব্যবহার করে প্রার্থীদের আনা হয়েছিল, তা ইতিমধ্যে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাম গোপন রাখার শর্তে এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন যে বাড়ির ঘর ভাড়া নিয়েছিল সিকন্দর, তা ফাঁকা পড়েছিল। করোনাভাইরাস মহামারীর আগে সেখানে খুদেদের একটি স্কুল চলত। সেখানেই নিট প্রার্থীদের রাখা হয়েছিল। পরীক্ষার দিন সেখান থেকেই তাঁদের পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে ওই পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে NTA
নিট পরীক্ষার দিনে রাজস্থানের একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিল সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকার আয়োজক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)। সংস্থার সিনিয়র ডিরেক্টর সাধনা পরাশর জানান যে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। সেইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিটের প্রশ্নপত্র যে ছবিগুলি ভাইরাল হয়েছিল, সেগুলির সঙ্গে আসল প্রশ্নপত্রের কোনও মিল নেই বলে দাবি করেন এনটিএয়ের সিনিয়র ডিরেক্টর।