প্রাক্তন অধিনায়ক এমএস ধোনির অধীনে ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর থেকে ভারত আর কোনও আইসিসি ট্রফি জিততে পারেনি। গত বছর ঘরের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়া টানা ১০ ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ফাইনালে বাজে ভাবে হেরে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় রোহিত শর্মা ব্রিগেডকে।
সেই ফাইনালে হার নিয়ে কথা বলতে গিয়েই প্রাক্তন তারকা বীরেন্দ্র সেহওয়াগ টিম ইন্ডিয়ার সমস্যার জায়গাটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, ঠিক কোন কারণে ১১ বছর ধরে ভারতে আইসিসি-র ট্রফির খরা চলছে। তাঁর দাবি, ভারতীয় ড্রেসিংরুমে নির্ভীক ক্রিকেট খেলার মানসিকতার অভাব রয়েছে।
নেটপাড়ায় একটি ভিডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, যেখানে সেহওয়াগকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘যদি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালের দিকে তাকাই, তবে ১১তম থেকে ৪০তম ওভারের মধ্যে ভারতের কেউ নির্ভীক ক্রিকেট খেলেনি। আমরা কেবল একটি বা দু'টি চার মেরেছিলাম।’
আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক রোহিত শর্মা শুরুটা ভালো করেছিলেন। তবে তিনি ৩১ বলে ৪৭ করে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে আউট হয়ে যান। এর পরেই ভারতের রানের গতি কমতে থাকে। যেটা আর কিন্তু ফেরেনি। শেষ পর্যন্ত ২৪০ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। কোহলি ৬৩ বলে ৫৪ রান করেছিলেন। ১০৭ বলে ৬৬ করেছিলেন কেএল রাহুল। কিন্তু কেউই বিধ্বংসী একটি ইনিংস খেলে ভারতকে ভালো জায়গায় নিয়ে যেতে পারেননি।
সেহওয়াগ তাই বলেছেন, ‘আমি আমার উদাহরণ দিতে পারি। আমি যখন জাতীয় দলের সদস্য ছিলাম, ২০০৭-০৮ থেকে ২০১১ (ওডিআই) বিশ্বকাপ পর্যন্ত, তখন আমরা প্রতিটি ম্যাচকে নকআউট ম্যাচ হিসেবে দেখতাম। বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল হিসেবে বিবেচনা করতাম। যদি আমরা হারি, ছিটকে যাব, এই মানসিকতা নিয়ে খেলতাম। তাই ২০০৭-০৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত, আমরা অনেক টুর্নামেন্ট জিতেছি এবং বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হয়েছি। আমরা এখন নেই, তাই মানসিকতাও বদলে গিয়েছে।’
তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘আমি মনে করি যে, এই মানসিকতা ভারতীয় ড্রেসিংরুমে দরকার, যখন নকআউট ম্যাচ খেলতে যাবে, তখন তারা নির্ভয়ে, সাহসিকতার সঙ্গে, এবং কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই খেলবে। আমার মনে হয়, বর্তমানে এই নির্ভীকতার অভাব ভারতীয় ড্রেসিংরুমে রয়েছে।’
২০২৩ ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনালে ২৪১ রান তাড়া করতে নেমে সহজেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ভারতীয় বোলাররাও ২৪০ রান ডিফেন্ড করতে পারেননি। ওপেনার ট্র্যাভিস হেডই একটা দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচটি জিতিয়ে দেন। ১২০ বলে ১৩৭ রান করে যখন হেড আউট হন, তততক্ষণে অজিদের জয়ের পথ তৈরি হয়ে গিয়েছে। প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া ছয় উইকেটে জিতে বিশ্বকাপের দখল নেয়।