আর মাত্র কয়েক ঘন্টা তারপরেই দুবাইতে শুরু হবে ২০২৪ আইপিএল নিলাম অনুষ্ঠান। ইতিমধ্যেই, এই নিলাম পর্বকে ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে ক্রিকেটপ্রেমীদের। এখন সবার নজর একটাই বিষয়ে যে কোন ক্রিকেটার কোন দলে যাবে। অন্যদিকে, সব ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি মাথা লাগাতে শুরু করে দিয়েছে ক্রিকেটার বাছাই ও দল তৈরি করা নিয়ে। একই সঙ্গে দুই মরশুমের বিজয়ী দল 'সানরাইজার্স হায়দরাবাদ'ও জোড় কদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে আসন্ন টুর্নামেন্টকে পাখির চোখ করে।
গতবারে মনের মতো হয়নি ফল। ভালো দল গড়েও সাফল্যের মুখ দেখতে ব্যস্থ সানরাইজার্স। বদল করা হয়েছে একাধিক কোচ। কিন্তু লাভের লাভ কিছু হয়নি। রোগ সেরে ওঠেনি সানদের। ফলে নতুন মরশুম, নতুন শপথ নিয়ে মাঠে নামবে হায়দরাবাদ। পুরনো ব্যর্থতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া তারা। ফলে সানদের জন্য এই নিলাম পর্ব খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তবে দল গঠনের আগে হায়দরাবাদকে মাথায় রাখতে হবে বেশ কিছু বিষয়।
কতো টাকা হাতে আছে?
ইতিমধ্যেই, প্রতিটি বিভাগের কয়েকজন ক্রিকেটারকে ছেড়ে দিয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। তবে একইসঙ্গে দলে রেখেছেন বহু ম্যাচ উইনারকে। তবে নিলামের ক্ষেত্রে বাকি দলেদের তুলনায় স্বস্তিতে রয়েছে তারা। এই নিলামের জন্য সানরাইজার্সের ঝুলিতে রয়েছে ৩৪ কোটি টাকা। এই অর্থের মধ্যেই ক্রিকেটার কিনতে হবে দলের ফ্র্যাঞ্চাইজিটিকে। এবার দেখার বিষয় কোন বিভাগের উপর বেশি নজর দিয়ে ক্রিকেটার কেনে তারা।
কতগুলো জায়গা রয়েছে?
'রিলিজ' তালিকায় দল থেকে বাদ পড়েছেন ৬ জন ক্রিকেটার। তাই এই মুহূর্তে হায়দরাবাদকে ৬টি স্লট পূরণ করতে হবে। যদিও ব্যাগে যা অর্থ রয়েছে তা অনেক। সুতরাং কিছুটা স্বস্তি থাকবেই ফ্র্যাঞ্চাইজির উপর এই স্লট পূরণ করাকে ঘিরে। তবে দেখার বিষয় গুরুত্ব কোন বিভাগকে বেশি দেওয়া হয়। ব্যাটিং, বোলিং নাকি অলরাউন্ডার?
কোন কোন জায়গা ফাঁকা আছে?
শেষ কয়েকটি মরশুম ধরে পিঞ্চ হিটারের অভাব দেখা গিয়েছে দলে। এছাড়াও রান রুখে দেওয়ার মত স্পিনারও নেই শিবিরে। অন্যদিকে বাদ পড়েছে কিছু তারকা ক্রিকেটার। সুতরাং এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে হায়দরাবাদের প্রধান লক্ষ্য হবে এই মুহূর্তে বেশি করে স্পিনার অলরাউন্ডার অন্তর্ভুক্ত করানো যাতে তাঁরা নিচের দিকে নেমে রান করতে পারে। তবে, কিছুটা চাপ রয়েছে বোলিংয়ের ক্ষেত্রেও। বেশ কয়েকটি মরশুম ধরে, বেশিরভাগ ম্যাচেই, বোলাররা একেবারেই অধিনায়কের চাহিদা পূরণ করতে পারেনি। বিশেষ করে অল্প রান রুখতে একেবারেই তারা হয়নি সফল। তবে যেহেতু পার্সে বেশি অর্থ আছে, তাই অনেক ভেবেচিন্তেই এই বছর ফিনিশার ও স্পিনার কিনতে হবে তাদের।
কাদের টার্গেট করতে পারে?
ইতিমধ্যেই, ২৬ নভেম্বর জমা করে দেওয়া হয়েছে 'রিটেনশন ও রিলিজ' তালিকা। বহু দলই ছেড়ে দিয়েছে নিজেদের ম্যাচ উইনার। তাই মনে করা হচ্ছে এই বছর হায়দরাবাদ নিজেদের দলে একাধিক তারকা হিটারদেরই নেবেন। রইল কথা বোলিংয়ের, তাহলে ডেথ ওভারের ক্ষেত্রে হার্ষাল প্যাটেল বরাবরই ভালো পারফর্ম করে এসেছে। পাশাপাশি, দরকারে ব্যাট হাতেও তিনি নিচের দিকে নেমে স্কোরবোর্ডে রান তুলতে সফল হয়েছেন। তবে দলের প্রধান ক্রিকেটারদের কথা মাথায় রেখে তাকে ছেড়ে দিয়েছে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। তাই হায়দরাবাদের কাছে এই বছর সুযোগ রয়েছে এই তারকা বোলারকে নিজেদের দলে জায়গা দেওয়ার এবং শিবিরকে আরও মজবুত করার। তবে যেহেতু অজস্র অর্থ রয়েছে তাদের ঝুলিতে, সেই ক্ষেত্রে মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্সকেও দলে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে হায়দরাবাদ। এই দু'জনও ব্যাট হাতে নিচের দিকে রান করতে সক্ষম। এবার দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত কাদেরকে দলে জায়গা দেবে তারা। তা বলবে সময়।
এবার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কাদের ধরে রেখেছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ?
আব্দুল সামাধ, অভিষেক শর্মা, এডেন মার্করাম, আনমোলপ্রীত সিং, ভুবনেশ্বর কুমার, ফজলহক, গ্লেন ফিলিপ্স, ক্লাসেন, মার্কো জানসেন, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, মায়াঙ্ক মারকান্ডে, নীতীশ কুমার, রাহুল ত্রিপাঠী, সানবীর সিং, শাহবাজ আহমেদ, উমরান মালিক, উপেন্দ্র সিং, ওয়াশিংটন সুন্দর।