কেরল নির্বাচনে কি এই প্রথমবার ভাঙতে চলেছে প্রথা? এই প্রশ্নের জবাবের দিকে তাকিয়ে অনেকেই। উল্লেখ্য, সিপিএম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ এবং কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ জোট গঠিত হওয়ার পর থেকেই কখনও কোনও জোট পরপর দুই দফা ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। সেই প্রথা মানার ইঙ্গিত দিয়েই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বামজোটকে প্রায় উড়িয়ে দেয় কংগ্রেস। তবে বুথ ফেরত সমীক্ষা বা এক্সিট পোলের ইঙ্গিত, প্রথা ভাঙছে। এই প্রথম কোনও জোট পরপর দুই বার সরকার করতে চলেছে কেরলে।
গত ৬ এপ্রিল কেরলের ১৪০টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছিল এক দফায়। এই রাজ্যে ক্ষমতা দখলের ম্যাজিক ফিগার ৭১। এই আবহে নির্বাচনের আগে প্রতিটি ওপিনিয়ন পোল বলেছিল যে কেরলে ফিরতে চলেছে পিনারাই বিজয়নের সরকার। সেই অঙ্ক বদলাতে কেরলে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন রাহুল গান্ধী। তবে বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, রাহুল ফেল করতে চলেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচবে ২০টি আসনের মধ্যে ১৯টিতেই জিতেছিল হাত শিবির। রাহুল গান্ধী নিজে কেরলের ওয়ানাড থেকে জিতে লোকসভায় যান। আর তাই ২০২১ সালে কেরল জয়ের বিষয়ে আশাবাদী ছিলেন দশ জনপথের বাসিন্দারা। তবে সমীকরণ বদলে যায় করোনা কালে। সরকার ও প্রশাসনের তত্পরতা বামজোটকে স্থানীয় নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়ী হতে সাহায্য করে। আর সেই মোমেন্টামকে কাজে লাগিয়েই একুশের লড়াইতে নেমেছিল সিপিএম। আর রাহুল ম্যাজিকের আশায় কংগ্রেস হারানো জমি ফিরে পাওয়ার মরিয়া চেষ্টায় নামে।
কংগ্রেসকে কেরলে জেতাতে রাহুল এতটাই মরিয়া ছিলেন যে বামজোটের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে গিয়ে তিনি ভুলে যান যে কেরল বাদে বাংলা-অসমে সিপিএম-এর সঙ্গে জোট বেঁধেছে কংগ্রেস। কেরলে নির্বাচনী প্রচারে রাহুল পিনারাই বিজয়নকে তোপ দাগতে গিয়ে সিপিএম-কে আরএসএস-এ সঙ্গে তুলনা করে বসেন।
এদিকে 'ডিসাইডিং ফ্যাক্টর' না হতে পারলেও কংগ্রেসের ভোটে বিজেপি ভাগ বসিয়ে আখেড়ে লাভ করে দেয় বামজোটকে। কেরলে মেট্রোম্যান শ্রীধরণকে 'মুখ' করে লড়ার ছক কষেছিল বিজেপি। সঙ্গে ছিল সবরীমালা ইস্যু। তবে ভোট শতাংশের নিরিখে ফেলনা না হলেও, বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে ডাবল ডিজিটে যাবে না গেরুয়া শিবিরের আসন সংখ্যা।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বিভিন্ন এক্সিট পোলে কী চিত্র উঠে এসেছে-
ইন্ডিয়া টুডে এক্সিট পোল - এলডিএফ জিততে পারে ১০৪ থেকে ১২০ আসন। কংগ্রেস পেতে পারে ২০ থেকে ৩৬ আসন। এদিকে বিজেপির ঝুলিতে ০-২ আসন যেতে পারে।
রিপাবলিক-সিএনএক্স এক্সিট পোল - এলডিএফ জিততে পারে ৭৬টি আসন। কংগ্রেস পেতে পারে ৬১টি আসন। এদিকে বিজেপির ঝুলিতে ৩টি আসন যেতে পারে।
এবিপি-সি ভোটার - এলডিএফ জিততে পারে ৭১ থেকে ৭৭টি আসন। কংগ্রেস পেতে পারে ৬২ থেকে ৬৮টি আসন। এদিকে বিজেপির ঝুলিতে ০ থেকে ২টি আসন যেতে পারে।
টিভি৯-পোলস্ট্র্যাট - এলডিএফ জিততে পারে ৭০ থেকে ৮০টি আসন। কংগ্রেস পেতে পারে ৫৯ থেকে ৬৯টি আসন। এদিকে বিজেপির ঝুলিতে ০ থেকে ২টি আসন যেতে পারে।
নিউজ ২৪-চাণক্য - এলডিএফ জিততে পারে ৯৩ থেকে ১১১টি আসন। কংগ্রেস পেতে পারে ২৬ থেকে ৪৪টি আসন। এদিকে বিজেপির ঝুলিতে ০ থেকে ৬টি আসন যেতে পারে।