আগামী ৪ জুন লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর দুর্নীতি রুখতে আরও কঠোর পদক্ষেপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জলপাইগুড়ির সভা থেকে সেই হুঙ্কার শোনা গিয়েছিল। আজ, সোমবার বাঁকুড়ার জনসভা থেকে তার পালটা জবাব দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা করেন বাঁকুড়ায়। বাঁকুড়া জেলার রাইপুরে সভা করে পাল্টা সুর সপ্তমে তোলেন তিনি। এই আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন তালড্যাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী। বাঁকুড়া আসনে তাঁর লড়াই কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বিদায়ী সাংসদ সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে।
এদিকে বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুর জেলার দুটো লোকসভা আসনই জিততে হবে বলে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি, ‘আমি তো বলতে পারি, আমাদের সরকার তো ক্ষমতায় থাকবে এখানে। আমিও তো বলতে পারি, আপনাদের বিজেপি নেতাদের আমি জেলে পাঠাবো। কিন্তু, আমি এটা বলতে চাই না। কারণ, আমি এটা বিশ্বাস করি না। আমি অনেক অত্যাচারের সঙ্গে লড়াই করেছি। নতুন সংসদ ভবনকে জেলে পরিণত করে সবাইকে ভরে দিন। কিন্তু হুমকি দেবেন না।’ এই ভাষাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: ছাগল বিক্রির টাকা অধীরকে দিলেন গৃহবধূরা, কঠিন লড়াইয়ে অক্সিজেন পেলেন রবিনহুড
অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদীর ‘ধমকে’ ভয় পান না বলে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বললেন, ‘আপনি কাকে ধমক দিচ্ছেন, আমরা ভয় পাই না। আপনার হুঙ্কার দলকে চাঙ্গা করার জন্য দিন। দলকে অক্সিজেন সরবরাহ করার জন্য দিন। ওটা গণতন্ত্রের জন্য কার্বন ডাই অক্সাইড। ওটা নাইট্রোজেন। ওটা সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে না। আপনি কাকে হুমকি দিচ্ছেন। আমরা আপনার হুঙ্কারে ভয় পাই না।’ একইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, মোদী এই সব বলছেন তাঁর দল বিজেপিকে উজ্জীবিত করার জন্য। লোকসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার থাকবে। তখন এই সব হুমকি দেওয়া যাবে না।
এছাড়া জলপাইগুড়ির সভা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেস একে অপরকে বাঁচাতে ইন্ডিয়া জোট তৈরি করেছে। আমি বলি দুর্নীতি হটাও, ওঁরা বলে দুর্নীতি বাঁচাও।’ পালটা মোদীকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘বলছে ৪ জুনের পর সবাইকে জেলে ভরব। এই কথা কি প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোভা পায়? গোটা দেশে জেল বানান। এজেন্সি দিয়ে গোটা দেশকে জেল বানিয়ে রেখেছেন। আমরা আপনাকে ভয় পাই না। আপনাদের যদি সাহস থাকে, জনসাধারণের ভোট নিয়ে লড়াই করুন। আপনারা আমাদের কর্মীদের কেন গ্রেফতার করছেন? আপনারা কেন হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করেছেন? হেমন্তর স্ত্রী সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দেশের একমাত্র আদিবাসী সম্প্রদায়ের মুখ্যমন্ত্রী। আপনি কী না করছেন। আপনি ব্লকে ব্লকে প্রচার করুন। আমার আপত্তি নেই। আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু আপনি জলপাইগুড়ির সভা থেকে ওখানকার মানুষদের জন্য কি কোনও সাহায্যের কথা ঘোষণা করলেন?’