মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে রাম নবমীর মিছিলে হামলার জন্য দায়ী মুখ্যমন্ত্রী ও অধীর চৌধুরীর প্ররোচনামূলক বক্তৃতা। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই দাবি করলেন বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। এদিন তিনি রেজিনগরে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন, ‘গত ৫ দিন ধারাবাহিকভাবে মুখ্যমন্ত্রীর প্ররোচনা। রাম ভক্তদের বিরুদ্ধে অবস্থান। বিভাজনের রাজনীতি। সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ তৈরি করে নির্বাচনী বৈতরণী পার, জয় শ্রী রাম শব্দটাকে একটা গালাগালিতে রূপান্তর করে, গলাগলির বদলে সরাসরি আল্লার নামে দোয়া করতে যাতে জয় শ্রী রাম দাঙ্গা না বাধায়’।
মৌলবাদের কাছে আত্মসমর্পণ
মমতাকে কাঠগড়ায় তুলে শমীকবাবুর দাবি, ‘রামচন্দ্রের জন্মদিনের মিছিলকে মুখ্যমন্ত্রী আগেই দাঙ্গার মিছিল বলে চিহ্নিত করেছেন। তৃণমূল কংগ্রেস মুখে না বললেও রাম নবমীর মিছিলে হামলার লাইসেন্স দিয়েছে। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই ভাষায় কথা বলেন, তার দলের নীচু তলার কর্মীরা কী ভাষায় কথা বলবেন সেটা সহজে বোঝা যায়’।
শমীকবাবুর দাবি, ‘ওখানে গত কয়েকদিন ধরে চড়কের মেলা চলছিল। সেটা বন্ধ করার চেষ্টা হচ্ছিল। মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বলতে কী বোঝায় সেটা সেখানে যারা সংখ্যালঘু হয়ে গেছেন তারা ভালোই জানেন। রেজিনগরের ঘটনা ঘটার আগে মুখ্যমন্ত্রী ও অধীররঞ্জন চৌধুরী যে ভাষায় বক্তৃতা করেছেন তা প্ররোচনার সামিল। মৌলবাদের কাছে আত্মসমর্পণ। মৌলবাদকে উসকানি দেওয়া। শুধুমাত্র আগামী লোকসভা নির্বাচনে নিজের আসন সুরক্ষিত করার জন্য’।
পুলিশ কেন নিষ্ক্রিয়?
বিজেপির প্রশ্ন, ‘ছাদ থেকে যারা পাথর ছুড়েছে পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণ না করে যারা এই ঘটনাটা ধরে রাখার চেষ্টা করছে তাদের আক্রমণ করে তৃণমূল কংগ্রেসের পুলিশ যে ভাষা ব্যবহার করল তা নিন্দনীয়। একটার পর একটা বাড়ি বেছে বেছে ভাঙচুর করা হয়েছে। স্থানীয় হিন্দুদের দোকান লুঠ করা হল। মিষ্টির দোকান থেকে কোনও কিছু বাকি রাখেনি। সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে মানুষকে। কোনও পুলিশি ব্যবস্থা নেই। পুলিশ কঠোর হয়নি। পুলিশের চেনা চেহারা দেখা যায়নি’।
পুলিশের বিরুদ্ধে শমীকবাবুর অভিযোগ, ‘যারা কী ঘটেছে দেখার জন্য পৌঁছচ্ছিলেন তাদের আটকানোর জন্য রাস্তা বন্ধ করে দিল পুলিশ। আর ভিতরে লাগাতার ভাঙচুর চলল। অরাজনৈতিক ব্যক্তিদেরও বাধা দেওয়া হল। তাদের ওপর আক্রমণ চলল ধারাবাহিকভাবে। শিশু সহ ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি। তাদের মধ্যে একজন এতটা রক্তাক্ত যে আপনারাও শিউরে উঠবেন’।
বিজেপির প্রশ্ন, ‘রেজিনগরে রামভক্তরা সংখ্যালঘু বলে বাংলাদেশের মতো আক্রান্ত হবেন। মুখ্যমন্ত্রী যে ভাষায় কথা বলছেন তা সহরাওয়ার্দি বক্তৃতার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। উনি আমাদের দিদি না সহরাওয়ার্দির দিদি’?