অনেকেই দেখে ফেলেছেন আদিপুরুষ। যারা দেখেননি তাঁদের মধ্যে যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটু বেশিই অ্যাক্টিভ, তাঁদের নিশ্চয়ই একটা দৃশ্য চোখে পড়েছে। যা খুব ছড়াচ্ছে নানা প্রোফাইলে। যেখানে হনুমানকে রীতিমতো বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘কাপড় তোর বাবার, তেল তোর বাবার, আগুন তোর বাবার, জ্বলবেও তোর বাবার।’ যা শুনে চক্ষু চড়কগাছ সোশ্যাল মিডিয়ার। যে হনুমানকে ভগবান হিসেবে পুজো করা হয় তাঁর মুখে এ কেমন কথা!
ভগবান হনুমানের সংলাপগুলি ঘিরে বিতর্কের জবাব দিয়েছেন আদিপুরুষ সংলাপ লেখক মনোজ মুনতাশির। যখন তাঁর কাছে সংবাদমাধ্যমের তরফে প্রশ্ন রাখা হয় তিনি ইচ্ছে করেই হনুমানের মুখে এমন ‘সহজ সংলাপ’ বসিয়েছেন কি না, তখন জবাব আসে, ‘হ্যাঁ পুরোপুরি। এটা কোনও ত্রুটি নয়, এটা একটা অত্যন্ত সূক্ষ্ম চিন্তা প্রক্রিয়া যা বজরংবলীর জন্য সংলাপ লিখতে ব্যবহার করা হয়েছে।’ আরও পড়ুন: ‘জনসাধারণের দেখার উপযুক্ত নয়’, দিল্লি আদালতে আদিপুরুষ-এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন
হনুমানের মুখে ‘সরল সংলাপ’ বসানোর যুক্তি দিয়ে মনোজ মুনতাশির বলেন, ‘আমাদের একটি জিনিস বুঝতে হবে, একটি ছবিতে একাধিক চরিত্র থাকলে সবাই একই ভাষায় কথা বলতে পারে না। একটা নির্দিষ্ট বিভাজন তো থাকতেই হবে।’ আরও পড়ুন: 'আদিপুরুষ'দেখতে গিয়ে রক্তারক্তি কাণ্ড, হাত কেটে প্রভাসের ছবি রাঙালেন ভক্ত
‘আমি প্রথম নই যে এই ডায়লগটি লিখল। এটা আগে থেকেই আছে’, জবাব আসে মনোজের থেকে যখন তাঁকে ‘জ্বলবেও তোর বাবার’ সংলাপটি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।
সংলাপ লেখক তাঁর বক্তব্যের পেছনের যুক্তি ব্যাখ্যা করে বলেন, আমাদের দেশে 'কথাবাচক' বা গল্প বলার একটা ঐতিহ্য আছে। মনোজের যুক্তি দেশের সবচেয়ে বড় সাধক এবং কথাচাকরা ভগবান হনুমানের সংলাপ এভাবেই শুনিয়ে আসছেন এত বছর ধরে, যেমনটা তিনি ছবিতে রেখেছেন।
১৬ জুন সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে আদিপুরুষ একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছে। হিন্দু সেনা ইতিমধ্যেই দিল্লি হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেছে। যেখানে ‘আদিপুরুষ’ ছবিটি জনসাধারণকে দেখানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করার আবেদন করা হয়েছে। সঙ্গে দাবি করা হয়েছে, এটি মহর্ষি বাল্মীকি, তুলসীদাস প্রমুখ লেখকদের দ্বারা রচিত রামায়ণে বর্ণনা অনুসারে বানানো হয়নি। যা হিন্দুিদের ভাবাবেগে আঘাত।