আট মাসের মেয়ের মৃত্যুর ক্ষত এখনও সারেনি। গত মাসেই না-ফেরার দেশে চলে গিয়েছে সারেগামাপা-খ্যাত গায়ক অ্যালবার্ট কাবোর শিশুকন্যা এভিলিন। মেয়ের মৃত্যুর পর কান্নায় ভেঙে পড়েছিল বাবা-মা। কিন্তু পরস্পরের হাত শক্ত করে ধরে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করেছেন কাবো ও তাঁর স্ত্রী পূজা ছেত্রী। আরও পড়ুন-‘সারাদিন ওকে নিয়েই’, ৮ মাসের মেয়েকে হারিয়েছেন, দিদির মঞ্চেও কাবো-পত্নীর মুখে শুধুই এভিলিন
গত মাসেই হঠাৎ করে সারেগামাপা-২০২৩-এর রানার্স আপ কাবো ও তাঁর পরিবারের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। জন্মের পর থেকেই হার্টের সমস্যা ছিল এভিলিনের, চিকিৎসা করিয়েও সুফল মেলেনি। এভিলিনের চলে যাওয়ার ধাক্কা এখনও সামলে উঠেননি দম্পতি, তবুও জীবন বয়ে চলেছে নিজের ছন্দে। এর মাঝেই শুক্রবার ছিল কাবোর স্ত্রী পূজার জন্মদিন। আর স্ত্রীর জন্মদিনে আদুরে বার্তা কাবোর। দু-জনের বিয়ের বয়স ৫। ২০১৬ সাল থেকে একসঙ্গে রয়েছে তাঁরা। এদিন পূজার উদ্দেশে কাবো লেখেন- ‘তুমি আমার আত্মার কাছে খুব মিষ্টি, আমার হৃদয়ের একান্ত আপন, তোমাকে ভালোবেসেই আমার দিন কাটে, তুমি এক অসামান্যা নারী, আমি সত্যিই সৌভাগ্যবান পুরুষ (তোমাকে পেয়ে)। জন্মদিনের শুভেচ্ছা আমার ভালোবাসা’।
এরপর বার্থ ডে গার্লের সঙ্গে একটি মিষ্টি ছবিও পোস্ট করেন কাবো। ছবিতে দেখা গেল বউকে ভালোবাসার আগলে জাপটে রয়েছেন গায়ক। ক্যামেরার দিকে তাক করে হাসিমুখে ছবি তুলেছেন দম্পতি। পূজাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি কাবোর শুভাকাঙ্খীরা।
গত ৪ঠা জুলাই মেয়ে এভিলিনের মৃত্যু সংবাদ প্রকাশ্যে আনেন কাবো। ফেসবুক পোস্টে গায়ক জানিয়েছিলেন, ‘গল্পটা শেষ হলেও যাত্রাটা নয়। আমাদের জীবনের সবচেয়ে মিষ্টি গানটা গেয়েছো তুমি। আমাদের ধ্রুবতারা হয়ে থেকো। আর আমাদের পথ দেখিও। ওপারে ভালো থেকো। তোমার আত্মার শান্তি কামনা করি এভিলিন লেপচা।’ মেয়ের মৃত্যু নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে কাবো-পত্নী সেই সময় জানিয়েছিলেন- ‘ওর হার্টের সমস্যা ছিল। শুধু হার্টেই নয়, আরও বেশকিছু শারীরিক সমস্যা ছিল। চেষ্টা করেছি সুস্থ করার কিন্তু পারলাম না।'
পূজা বরাবরই কাবোর জীবনের সবচেয়ে বড় সাপোর্ট সিস্টেম। দিদি নম্বর ১-এর মঞ্চে এসে নিজেদের ভালোবাসার গল্প ফাঁস করেছিলেন কাবো-পূজা। উচ্চমাধ্যমিক দিয়েই স্কুল ড্রেস পরে কাবোর হাত ধরে পালিয়েছিলেন পূজা। সালটা ২০১৬। চার মাস প্রেমিকের বাড়িতেই ছিলেন পূজা, পরে কাজের সন্ধানে বেঙ্গালুরু পারি দেন দুজনে। ২০১৮ সালে বিয়ের পর্ব সারেন কাবো-পূজা। পূজা বেঙ্গালুরুতে ৫ বছর চাকরি করেছেন, কাবো যদিও দু-বছর পর কালিম্পং-এ ফিরে এসে পারিবারিক ব্যবসায় (টুরিস্ট গাইড) যোগ দেন। গাইড হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি তিনি নাইট ক্লাবে ও বারে গান গাইতেন। এরপর সারেগামাপা-তে অডিশন দেন। এই রিয়ালিটি শো-এর মঞ্চ বদলে দেয় তাঁর জীবন। আর জি বাংলা সারেগামাপা-তে অংশ নেওয়াকালীনই কাবোর জীবনে এসেছিল তাঁর ছোট্ট রাজকুমারী। এভিলিনের মৃত্যুশোক এখনও তাজা দুজনের মনে।