সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর প্রয়াত অভিনেতার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রাক্তন প্রেমিকা অঙ্কিতা লোখান্ডে। সুশান্তের সঙ্গে সাত বছর প্রেম সম্পর্ক ছিল অঙ্কিতার। অঙ্কিতা ব্যতীত অন্য কাউকেই কোনওদিন জনসমক্ষে নিজের প্রেমিকা বলে মান্যতাও দেননি সুশান্ত। অথচ অঙ্কিতা সুশান্তের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোয় তাঁকে ‘বিধবা’, ‘সতীন’ প্রভৃতি শব্দ বাণে আক্রমণ করেন রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর বন্ধুরা। এবার রিয়ার বেস্ট ফ্রেন্ড তথা ফারহান আখতারের লিভ ইন পার্টনার শিবানী দান্ডেকরের দাবি ‘২ সেকেন্ডের জন্য ফেমাস’ হতেই নাকি রিয়াকে আক্রমণ করছেন অঙ্কিতা। শুধু তাই নয় অঙ্কিতাকে পিতৃতন্ত্রের রাজকুমারী বলেও কটাক্ষ করেন শিবানী।
ঘটনার সূত্রপাত নিন্দুকদের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার অঙ্কিতার লেখা একটি খোলা চিঠিকে ঘিরে। যাঁরা বারবার অভিযোগের আঙুল তুলছেন অঙ্কিতার দিকে। সেখানে রিয়ার উদ্দেশ্যে একটি প্রশ্ন করেন নায়িকা। রিয়ার নাম না করেই অঙ্কিতা লেখেন, ‘যদি সে খুব ভালোভাবে সুশান্তের মানসিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানত। তাহলে কি ওঁর উচিত ছিল একজন অবসাদগ্রস্ত মানুষকে ড্রাগ সরবরাহ করা ? সেটা কিভাবে ওকে সেরে উঠতে সাহয্য করত?’
উল্লেখ্য এনসিবিকে দেওয়া জবানবন্দিতে রিয়া সুশান্তকে মাদক সরবরাহ করবার কথা মেনে নিয়েছেন। সেই মর্মেই এই কথা বলেন অঙ্কিতা। সেই কারণেই রিয়ার গ্রেফতারিকে ‘কর্মফল’ বলে উল্লেখ করেন অভিনেত্রী।
রিয়ার প্রিয় বান্ধবীর তরফে নতুন আক্রমণ উড়ে আসার পরও সোজা ব্যাটেই তার জবাব দিলেন অঙ্কিতা। বৃহস্পতিবার রাতে দীর্ঘ ইনস্টাগ্রাম পোস্টে অঙ্কিতা জানতে চান তাঁর জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হল শুধু কি এই কারণে যে তিনি টেলিভিশন তারকা?
অঙ্কিতা লেখেন, ‘আজ ২ সেকেন্ডের ফেম শব্দটা আমাকে ভাবাচ্ছে’। টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের স্ট্রাগলের কথা তুলে ধরেন অঙ্কিতা। লেখেন কীভাবে একটি রিয়ালিটি শো (জি সিনে স্টার কি খোঁজ,২০০৪) জিতে শুরু হয়েছিল তাঁর সফর। তবে নিজের প্রথম শো পবিত্র রিসতা কেমনভাবে ২০০৯ সালে তাঁর ভাগ্য বদলে দিয়েছিল। রাতারাতি গোটা দেশের মণিকোঠায় অর্চনা হিসাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। পাঁচ বছর ধরে টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় শো হিসাবে পরিচিতি এবং প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল পবিত্র রিসতা।
অঙ্কিতা আরও যোগ করেন, ‘খ্যাতি হল কেবলমাত্র সেই প্রেম এবং উষ্ণতা যা কোনও অভিনেতা জনসাধারণের কাছ থেকে পান। সমস্ত দর্শকের পাশাপাশি আমিও ‘অর্চনা’ চরিত্রের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে, আজও। আমার ভাগ্য এবং জনতা, উভয়েই আমার প্রতি যথেষ্ট অনুগ্রহ করেছে তাদের আশীর্বাদ এবং ভালবাসা বর্ষণ করে। কোনও অভিনেতার উচ্চাকাঙ্ক্ষা তাঁকে বিভিন্ন ভূমিকা ও চরিত্রকে চিত্রিত করার অন্বেষণ প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জোগায়। সেই থেকেই আমি ভাগ্যক্রমে মণিকর্ণিকার বাগী থ্রিতে কাজের সুযোগ পেয়েছি’।
সবশেষে শিবানী এবং নিজের সমালোচকদের অঙ্কিতা জানিয়ে দেন, ‘আমি গত ১৭ বছর ধরে টেলিভিশন এবং বলিউডে একজন অভিনেত্রী। এখন যখন আমি আমার প্রয়াত বন্ধুর জন্য ন্যায়বিচার চাইছি তখন কেউ কেউ বলছে যে আমি ন্যায়বিচার চাইছি কারণ আমার ২ সেকেন্ডের খ্যাতি এবং সস্তা প্রচার প্রয়োজন! কেন কোনও ব্যক্তি কেন এ জাতীয় অবস্থান নেবে তা আমি জানি না। বেশিরভাগ সময় টেলিভিশনে কাজ করেছি বলেই? যার সাথে আপনার প্রায় এক দশক ধরে সম্পর্ক ছিল তার পক্ষে আপনি কেন অবস্থান নেবেন শুধু এই কারণেই পাশে দাঁড়বেন, ২ সেকেন্ডের খ্যাতির জন্য ? টেলিভিশন অভিনেতাদের দিকে নীচু চোখে তাকানো বন্ধ করুন। যদি আমার কথাগুলিকে ‘বিকৃত' হিসাবে বর্ণনা করার এটা কারণ হয়ে থাকে। আমি টেলিভিশন অভিনেতা হয়ে গর্বিত। আমি যাদের ভালোবাসি এবং যাদের জন্য পরোয়া করি তাদের হয়ে সবসময় আওয়াজ তুলব। কেউ রুখতে পারবে না’।
শিবানী সরাসরি অঙ্কিতাকে কটাক্ষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন, ‘অঙ্কিতা হল পিতৃতন্ত্রের রাজকুমারী যে নিজে কোনওদিন সুশান্তের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক নিয়ে মাথা ঘামায়নি। নিঃসন্দেহে ও ২ সেকেন্ডের খ্যাতি চায়, সেই জন্য রিয়াকে আক্রমণ করছে। এই যে রিয়ার বিরুদ্ধে ডাইনি খোঁজ চলছে তার বড় করাণ অঙ্কিতা। ওকেও ডাকা উচিত! ওর মুখ বন্ধ করা দরকার! অনেক হয়েছে অঙ্কিতা! তোমার থেকে বেশি ঘৃণা আর কারুর মনে নেই!’