মমতার সব সময়ের সঙ্গী ছিলেন একসময় ‘কানন’ শোভন। তবে বৈশাখী আসার পর দূরত্ব বাড়তে বাড়তে বিশাল আকার ধারণ করে। সম্প্রতি তা নিয়ে মুখ খুললেন বৈশাখী।
1/5
একসময় কানন বলতে অজ্ঞান ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সর্বাধিক ঘনিষ্ঠ হিসেবে ধরা হত শোভন চট্টোপাধ্যায়কেই। তবে সেই সুসম্পর্ক ভেঙে যায় শোভনবাবুর সঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কের পর। স্ত্রী রত্নার সঙ্গে বিচ্ছেদ, বৈশাখীর সঙ্গে শোভনের ঘনিষ্ঠতা নাকি মেনে নিতে পারেননি মমতা। দুজনের তিক্ততা এমন জায়গায় পৌঁছয় যে আবাসন ও দমকলমন্ত্রীর পদ থেকে ২০১৮ সালে পদত্যাগ দিয়ে বেরিয়ে আসেন শোভন।
2/5 আজতক বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মমতা আর শোভনের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে শোনা যায় বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি জানান, রত্না তাঁকে ভয় দেখিয়েছিলেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যাবেন। গিয়ে সব বলবেন। আর মমতাও শোভনকে বলবেন, ‘কানন তুই বৈশাখীকে ছাড়।’ আর শোভনও সেই শুনে ছেড়ে দেবেন বৈশাখীকে। যাতে বৈশাখী শোভনকে গিয়ে বলেছিলেন, ‘তুমি আমাকে এমনিই ছেড়ে দিতে পারো। আমি মনোজিতকে আটকাইনি তোমাকেও আটকাব না। কিন্তু কেউ আমাকে ছাড়তে বললো আর তুমিও ছেড়ে দিলে এমন অসম্মান করো না।’
3/5 বৈশাখী জানান, সেই সময় শোভন তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, ‘আমি যার হাতটা ধরি ছাড়ার জন্য ধরি না কখনও’। যাই হোক, দুজনে ঠিক করেন রত্না কিছু বলার আগে তাঁরা যাবেন নিজেরাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। বৈশাখী বলেন, ‘আমরা চাইনি তৃতীয় ব্যক্তি আমাদের সম্পর্কের কথা ওঁকে গিয়ে বলুক। ও বলতে চাইছিল আমার ব্যাপারে দিদিকে। সেই মতো মমতাকে গিয়ে ও সবাটা বলে। ২০১৭ সালের শুরুর দিক সেটা। আমার তখন পরিচায় তৃণমূলের কর্মী হিসেবেই। দিদি তখন কিছু বলেনি শুনে। আর আমার কখনও মনে হয়নি দিদি রত্নার কথা বিশ্বাস করবে। যে একঢোক জল খেত মমতা আর অভিষেককে গালাগালি করে।’
4/5 বৈশাখী জানান, রত্নার সঙ্গে শোভনের ঝগড়ার একটা বড় কারণই নাকি ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আনুগত্য। তাঁর কথায়, ‘এমন হয়েছে আমরা শোভনের বাড়িতে কাজ করছি। শোভন বলছে হঠাৎ করে মমতাদি যদি আমাকে ৯তলা বাড়ি থেকে ঝাঁপ দিতে বলে আমি দিয়ে দেব। আর তাতে রত্না বলছে, ‘কেন আমার ছেলেমেয়েরা কি বাণের জলে ভেসে এসেছে। ওই পাগল মহিলার কথা শুনতে হবে।’ আমরা তখন বলছি আরে রত্নাদি তুমি কি পাগল, মমতাদি কেনই বা বলবে ৯তলা থেকে ঝাঁপ দিতে, উনি কেনই বা ঝাঁপ দেবেন।’
5/5 বৈশাখী এরপর বলেন, ‘আমি আর শোভন সেই সময় ভাবতেই পারেননি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সহ্য করতে পারত না সে গিয়ে কী আর বোঝাবে! কিন্তু ও যে চালাকিটা করল ও গিয়ে বোঝাল যে মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকেও এগিয়ে আছে আরেকজন। আর সে হল বৈশাখী। এটাই ও গিয়ে বলেছে। আমাকে বলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠরা। ও আমার নামে তিনটে কথা বলেছে-- এক বৈশাখী বিজেপির চর, দুই বৈশাখী শোভনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে আলাদা করে দিচ্ছে। ফলে ভুল বোঝাবুঝির একটা প্রাচীর তৈরি করে দিল।’