‘নাদান পরিন্দে ঘর আজা…’ স্বাধীনতা দিবসের দিন এই গানের তালে মেতেছিল গোটা ভারত। সুরের মূর্ছনায় ডুবে গিয়েছিলেন বিচারকেরা। ইন্ডিয়ান আউডলের ১২ নম্বর সিজনের বিজয়ী হওয়ার অন্যতম প্রধান দাবীদার ছিলেন পবনদীপ রাজন। ফলাফল ঘোষণার পরেই উৎসবে মেতে ওঠে পাহাড়। উত্তরাখণ্ডের পবনদীপের চোখের তখন জয়ের অশ্রু।
তবে বড্ড বেশি নিরাশ হল বাংলা। আসলে বনগাঁ-র মেয়ে অরুণিতা কাঞ্জিলালকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিল তারা। তাঁর একের পর এক ধামাকাদার পারফরম্যান্স, তাঁর মিষ্টি সুরের জাদুতে ৮ মাস ধরে ডুবেছিল গোটা দেশ। ফাইনালের মঞ্চে ‘ঘুমর’-এর তালে মাত করেছিলেন তিনি। কিন্তু দ্বিতীয় হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল অরুণিতাকে। আর এক রানার্স-আপ সায়লি কাম্বলে।
গত আট মাস ধরে সুর দিয়ে যেন ছবি এঁকে চলেছিলেন পবনদীপ-অরুণিতারা। আর তাঁদের সুরেই ডুব দিয়েছিল গোটা দেশ। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ফাইনালে ৬ জন প্রতিযোগী জায়গা করে নিয়েছিলেন। পবনদীপ রাজন, অরুণিতা কাঞ্জিলাল, সন্মুখাপ্রিয়া, নীহাল তাউড়া, মহম্মদ দানিশ এবং সায়লি কাম্বলে। স্বাধীনতা দিবসের দিন ১২ ঘণ্টা ধরে চলে গ্র্যান্ড ফিনাল। দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা। তালে, সুরে, নাচে, গানে, উৎসবে মেতে উঠেছিল ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চ।
সব লড়াই শেষে ট্রফি ওঠে পাহাড়ের পবনদীপের হাতেই। ইন্ডিয়ান আইডলের সোনালি ট্রফি এবং ২৫ লক্ষ টাকার পুরস্কারমূল্য জিতে নেন সুরের জাদুকর। সেই সঙ্গে একটি গাড়ির চাবিও তুলে দেওয়া হয় পবনদীপের হাতে।
এই ফাইনালে হার বা জয় পাওয়াটা বোধহয় বড় বিষয় ছিল না। রবিবার সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়ে সুরে সুরে ভরে গিয়েছিল সকলের হৃদয়। কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় বলতে হলে, ‘তোমার কন্ঠে রাখিয়া এসেছি মোর কন্ঠের গান/এইটুকু শুধু রবে পরিচয় ? আর সব অবসান ?’ সত্যি সব কিছুরই অবসান হয়ে যায়। থেকে যায় শুধু শিল্প। ইন্ডিয়ান আইডল-এর মঞ্চে শুধু সুরের ঝংকার থেকে গেল, থেকে গেল গানের মূর্ছনা। আর থাকল কিছু রঙিন স্মৃতি।