টলিউড তারকাদের আক্রমণ শাণাতে ওস্তাদ এই প্রযোজক। এই তো দু-দিন আগেই সরাসরি সোহম চক্রবর্তীকে বিঁধে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন রাণা সরকার। এবার তাঁর নিশানায় অনির্বাণ। তবে পরোক্ষা টলিউডের এই হার্টথ্রব নায়ককে খোঁটা দিলেন ‘মানবজমিন’ প্রযোজক। আসলে বিতর্কিত মন্তব্য করায় রাণার জুড়ি মেলা ভার। রবিবার ফেসবুকে এমন একটি বিস্ফোরক পোস্ট লিখেছেন রাণা, তিনি সরাসরি কারুর নাম নেননি ঠিকই। তবে নেটিজেনদের বুঝতে অসুবিধা হয় না সেটি অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে উল্লেখ করে।
ঠিক কী লিখেছেন রাণা সরকার? ‘গরীবের অ্যাল প্যাচিনো’ বলে উল্লেখ করে সেই ব্যক্তিকে নিয়ে প্রযোজক লেখেন, ‘গরিবের আল পাচিনোর নতুন সিনেমা রিলিজের প্রথম দুদিনে এক লাখ টাকাও বিক্রি নেই বক্সঅফিসে । শারুক্ষান ফিরবে বলেছিলো কিন্তু খোকা নিজেই ভ্যানিশ হয়ে যাবে কে জানতো ? তবুও আঁতলামো চলবে, নিজের একক অভিনীত ছবি দ্বিতীয় সপ্তাহে টানার ক্ষমতা নেই কোনোদিনই , তবু মুখোশ পরা ডায়লগবাজি চলবেই।’ এরপরেও থেমে থাকেননি রানা সরকার। তিনি লেখেন, 'বন্যরা বনে সুন্দর,কিছু ষ্টার ওটিটি-ক্রোড়ে। আর আমাদের কিছু করার নেই, আমরা অন্য কোথাও যাবোনা আমরা এই দেশেতেই থাকবো।
প্রসঙ্গত, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ ছবিতে অনির্বাণের বিখ্যাত চরিত্রের নাম ‘খোকা’, সে কথা সবার জানা। পাশাপাশি সদ্য পরিচালক হিসাবে হাতেখড়ি হয়েছে অনির্বাণের। অন্যদিকে গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে অনির্বাণ-ঈশা-অর্জুন অভিনীত ছবি ‘মিথ্যে প্রেমের গান’। ছবির বক্স অফিস রিপোর্ট খুব বেশি আশাজনক নয় সেটাও স্পষ্ট। অনির্বাণ ওটিটির জনপ্রিয় নায়ক সে কথাও সবাই জানে, তাই রাণার পোস্ট দেখে দুয়ে দুয়ে চার করতে কারুর অসুবিধা হয়নি।
রাণা সরকারের এই স্টেটাস নিয়ে ফেসবুকের মন্তব্য বাক্স ধুন্ধুমার কাণ্ড। অনির্বাণ ভক্তরা ট্রোল করতে ছাড়েননি প্রযোজককে। সেখানে মন্তব্য করে রানা বুঝিয়ে দিয়েছেন আদতে তাঁর নিশানায় ছিলেন অনির্বাণই। একজন লেখেন, ‘আপনার সিনেমা মানব জমিন যে চলল না সে সে বিষয় অনির্বাণ কোন পোস্টটি করল না। আর আপনি এত খবর রাখেন ওর। অনির্বাণ দার এখনই উচিত আপনার সাথে দেখা করে এক বালতি সমবেদনা উপহার দেওয়া।’ এই কটাক্ষের জবাবে প্রযোজক লেখেন, ‘সেই অনুভব থাকা সম্ভব নয় আর আমার চাইও না, আপাতত ওড়া বন্ধ করুক, উপলদ্ধি করুক নিজের দম কতটা আর টাকা ও কমফোর্ট এর লোভ ছেড়ে নিজের প্রতিভার অপচয় বন্ধ করুক’।
অপর একজন অনির্বাণের জীবনযুদ্ধের কথা স্মরণ করালে প্রযোজক আরও আক্রমণাত্বক। রাণা সরকার লেখেন, ‘মাসে দশ লাখ টাকা বাঁধা একটি প্রোডাকশন হাউস থেকে, এটাই স্ট্রাগল ? যতই প্রতিভা থাকুক জীবন যুদ্ধ না থাকলে শিল্প হয় ? বাদল সরকারের স্ক্রিপ্ট বা কোনো বিদেশী কন্টেন্ট ঝেড়ে ওয়েবে কিছু কাজ করা ছাড়া রাস্তা আছে ? আর অভিনয় ? দুঃখের সঙ্গে বলছি, এখানে ঋত্বিক চক্রবর্তী, পরমব্রত, যীশু এরা কিন্তু যেকোনো সময়ে অভিনয়ে একশো গোল দিতে পারে , এদের জীবনের যুদ্ধ সম্বন্ধে খোঁজ নিন তারপর মন্তব্য করবেন’।
গোটা বিষয় নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি অনির্বাণ। অনেকের মনেই প্রশ্ন, টলিউডের ভিতরেই এত্ত গণ্ডোগোল থাকলে বক্স অফিসে লক্ষ্মীলাভ কি সত্যি কোনওদিন সম্ভব হবে? সেই উত্তর তো অধরাই রয়ে গেল!