২০২১ সালে মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন আরিয়ান খান। গভীর রাতে এক প্রমোদতরী থেকে আটক করা হয়েছিল তাঁকে। যদিও ২০২২ সালেই এনসিবি উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে শাহরুখ পুত্রকে বেকসুর খালাস দেয় মাদক মামলা থেকে। তবে সেই মামলায় ফেঁসে যান তদন্তকারী অফিসার সমীর ওয়াংখেড়ে নিজে। এনসিবির তৎকালীন জোনাল ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে দুর্নিতীর মামলা শুরু করেছে সিবিআই। অভিযোগ আরিয়ান খানকে ড্রাগ মামলায় বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের থেকে ২৫ কোটি টাকা তোলাবাজির চেষ্টা করেছেন ওয়াংখেড়ে।
নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে আদালতে শাহরুখের সঙ্গে হওয়া ফোন চ্যাটের একটি কপি জমা দিয়েছিলেন ওয়াংখেড়ে। শাহরুখের পাঠানো একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ, ও তাতে এই এনসিবি কর্তার জবাব ছিল তাতে।
তবে এবার এনসিবি দিল্লি আদালতের কাছে জারি করা একটি হলফনামায় দাবি করল যে শাহরুখের সঙ্গে হওয়া সেই চ্যাট ওয়াংখেড়ে প্রমাণ হিসেবে দাখিল করতে পারবেন না, কারণ এতদিন তিনি তা ‘গোপন’ রেখেছিলেন। নিজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের না জানিয়ে ওয়াংখেড়ের এই এই ধরনের চ্যাট চালিয়ে যাওয়ার কোনও কারণ ছিল না বলে দাবি তোলেন তাঁরা। সঙ্গে ফেডারেল সংস্থা বলেছে বর্তমানে সাসপেনডেন্ট এই অফিসার অভিনেতাকে বেশ কিছু কলও করেছিলেন।
গত মাসেই শাহরুখের সঙ্গে হওয়া সেই চ্যাট দিল্লি হাইকোর্টে তুলে ধরে ওয়াংখেড়ে দাবি করেন যে, খোদ শাহরুখ খান তাঁর সততার প্রশংসা করেছে। তবে সেই দাবি খণ্ডন করে এনসিবির তরফে ১৭ জুন একটি ৯২ পৃষ্ঠার হলফনামা দাখিল করা হয় আদালতে।
যেখানে লেখা রয়েছে- ওয়াংখেড়ে এবং একজন অভিযুক্তের বাবার (শাহরুখ খান) মধ্যে চ্যাট কখনও সততা প্রমাণ করতে পারে না। কারণ এতদিন তিনি তা লুকিয়ে রেখেছিলেন। এমনকী স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেটিং টিম (SET)-এর কাছেও সেগুলি পেশ করেননি। এছাড়াও, এটি লক্ষণীয় যে ওয়াংখেড়ে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের না জানিয়ে শাহরুখ খানের সঙ্গে ওই ধরনের চ্যাট চালিয়ে গিয়েছেন। NCB আপাতত চায় শাহরুখ ও ওয়াংখেড়ের মধ্যে হওয়া সেই চ্যাট মূল্যায়ন করে দেখতে। সঙ্গে আদালতে এনসিবি দাবি করে, অনেকক্ষেত্রে শাহরুখ খানকে ফোনও করেছেন ওয়াংখেড়ে। সেক্ষেত্রে কী কথা হয়েছে যা চ্যাটের মাধ্যমে প্রমাণ হওয়া সম্ভব নয়।
২০২১ সালের অক্টোবর মাসে শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খান ও তাঁর বন্ধু আরবাজ মার্চেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই মামলাতেই সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ ওঠে পরবর্তীকালে। তিনি আরিয়ান খানকে বাঁচিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বিপুল অঙ্কের টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠায় সরিয়ে দেওয়া হয় মামলা থেকে। চলতে থাকে সিবিআই তদন্ত। এরপর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সমীর। আপাতত ৫ জুলাই পর্যন্ত সমীর ওয়াংখেড়ের অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচ বৃ্দ্ধি করেছে হাইকোর্ট।